ইউক্রেনে ১৫ হাজার রুশ সেনা নিহত
ইউক্রেনে মস্কোর বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর পর সেখানে এখন পর্যন্ত ১৫ হাজারের মতো রুশ সেনা নিহত ও আরো ৪৫ হাজার আহত হয়েছে বলে ধারণা যুক্তরাষ্ট্রের। বুধবার দেশটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ-র পরিচালক উইলিয়াম বার্নস ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার হতাহতের সংখ্যা নিয়ে তাদের এ অনুমানের কথা জানান। যুদ্ধে ইউক্রেনেরও বিপুল পরিমাণ সেনা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে প্রতিবেশী দেশে অভিযান চালানোর নির্দেশ দেয়ার পর গত প্রায় ৫ মাসে রুশ বাহিনী ও তাদের মিত্ররা ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দনবাস অঞ্চলের বেশির ভাগই দখলে নিয়েছে। এখন পর্যন্ত তাদের নিয়ন্ত্রণে যাওয়া অংশটি পুরো ইউক্রেনের প্রায় এক পঞ্চমাংশ। এই অর্জনের জন্য রুশ বাহিনীকে বিরাট মূল্য দিতে হয়েছে, কলোরাডোর আস্পেন সিকিউরিটি ফোরামে দেয়া বক্তৃতায় এমনটিই বলেছেন বার্নস।
‘মার্কিন গোয়েন্দাদের সর্বসাম্প্রতিক অনুমান বলছে, তাদের (রাশিয়া) ১৫ হাজারের মতো সেনা নিহত হয়েছে, আর তারও তিনগুণ আহত হয়েছে। অর্থাৎ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বার্নস বলেছেন, ‘ইউক্রেনীয়দেরও অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তবে সম্ভবত রাশিয়ার চেয়ে খানিকটা কম। কিন্তু এরপরও, ব্যাপক হতাহত,’। রাশিয়া এমনকি শান্তিকালীন পরিস্থিতিতেও তাদের সামরিক বাহিনীতে কর্মরতদের মৃত্যুর তথ্য ‘গোপন’ রাখে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মস্কো ইউক্রেনে তাদের হতাহতের কোনো সংখ্যাও প্রকাশ করছে না। অভিযান শুরুর একমাস পর সর্বশেষ গত ২৫ মার্চ তারা ইউক্রেনে তাদের এক হাজার ৩৫১ সেনার মৃত্যুর কথা জানিয়েছিল। অন্যদিকে কিয়েভের সরকার জুনে যুদ্ধে প্রতিদিন তাদের ১০০ থেকে ২০০ সেনা মারা পড়ছে বলে স্বীকার করে নিয়েছিল। বুধবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, মস্কো ইউক্রেনকে ঘিরে যে লক্ষ্য ঠিক করেছিল, তার আওতা বেড়েছে। কেবল দনবাসই নয়, তাদের লক্ষ্য এখনো আরো অনেক কিছু। তবে বার্নস বলছেন, এখন পর্যন্ত রুশ সেনাদেরকে দনবাস ছাড়া ইউক্রেনের অন্য অংশ দখলে তেমন মনোযোগ দিতে দেখা যাচ্ছে না। যা ইঙ্গিত দিচ্ছে, অভিযানের শুরুর দিকের ব্যর্থতা থেকে তারা বড় ধরনের শিক্ষা নিয়েছে। মস্কো ইউক্রেনে অভিযানের শুরুর দিকেই কিয়েভ দখলের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় বলে ভাষ্য পশ্চিমাদের। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে তার প্রশাসনের ভেতর বড় ধরনের শুদ্ধি অভিযান চালাতেও দেখা যাচ্ছে। রুশ গুপ্তচরদের নির্মূলে ব্যর্থতার কারণে তিনি এরই মধ্যে অনেক সরকারি কর্মকর্তাকে তাদের পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছেন, অসংখ্য রাষ্ট্রদ্রোহ মামলারও ঘোষণা দিয়েছেন। যুদ্ধক্ষেত্রে সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত ইউক্রেনকে বিপুল পরিমাণ গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহ করেছে; সে কারণেই জেলেনস্কির প্রশাসনের ভেতর রুশ অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে পেন্টাগন ও সিআইএ-র সাবধান হওয়া উচিত কি না, সেই প্রশ্নও উঠছে। বার্নস অবশ্য এখনো এ নিয়ে খুব একটা উদ্বিগ্ন নন।
সিআইএ পরিচালক বলেছেন,‘যে অংশীদারিত্ব আমরা নির্মাণ করেছি, তা যে কার্যকর সে ব্যাপারে আমরা আত্মবিশ্বাসী। আমরা ইউক্রেনের নেতৃত্ব ও সেনা সদস্যদের সাথে বিপুল পরিমাণ গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি করছি, যেগুলোকে তারা খুব কার্যকরভাবেই ব্যবহার করছে,’।