গ্রামেগঞ্জে ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়ছে ‘পরকীয়া’ প্রতিকারের উপায় নিয়ে শঙ্কা
গ্রামেগঞ্জে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া ‘পরকীয়া’ নিয়ে বগুড়া জেলার দুপচাঁচিয়া উপজেলার ‘গুনাহার ইউনিয়ন পরিষদ’ এর চেয়ারম্যান জননেতা নূর মোহাম্মদ আবু তাহের অতি সম্প্রতি জনপ্রিয় সোস্যাল মিডিয়া ফেসবুকে একটা আলোচিত স্ট্যাটাস দেন । তৃণমূলে তার গভীর পর্যবেক্ষণ ওঠে এসেছে। সমাজের পঁচনশীল ক্ষতগুলো ঠিক করতে সময় মত পদক্ষেপ না নিতে পারলে পরিস্থিতি হতে পারে অনেক ভয়াবহ। সামাজিক পবিত্র ও সৌন্দর্য ব্যাহত হতে পারে শঙ্কাভাবে। তিনি উল্লেখ করেন- আল্লাহর দাসত্ব ভুলে নফসের দাসত্বে মাতোয়ারা অনেক অনেক বনি আদম! আমাদের ধ্বংস অনিবার্য! তার শঙ্কা নিয়ে সমাজে বহুমাত্রিক উপলব্ধি, বিশ্লেষণ এবং করণীয় নিয়ে চিন্তার করা সময় উপেক্ষা করা সঠিক হবে না। অত্যন্ত সময়উপযোগী বক্তব্য হওয়ায় তার স্ট্যাটাসটি গ্রামীণ আলো’র পাঠকদের জন্য এখানে হুবহু তুলে ধরা হলো।
এক.
সুন্দরী মেয়ে তার স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি বেড়াতে এসেছে। স্বামী কাজের প্রয়োজনে অন্য শহরে গিয়েছিল। একজন স্বামীর কাছে তার শশুরবাড়ী অবশ্যই স্ত্রীর জন্য নিরাপদ। বেদনার কথা কি জানেন? মায়ের উপস্থিতিতে মেয়ে তার পরকীয়া প্রেমিককে নিয়ে বিছানায়। মেয়ের মা তার ছোট্ট নাতীকে নিয়ে আরেক ঘরে।
দুই.
একজন মেয়ে এসে হাউমাউ করে কাঁদছে। তার প্রিয়তম স্বামী একজন প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত। ছেলেটাকে ডাকলাম। প্রথমে স্ট্রেইট অস্বীকার। দু’তিনটা থাপ্পড় মারতেই ছেলেও হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো। তার ভাষায় প্রবাসী ফুফাতো ভাইয়ের স্ত্রীর পক্ষ থেকে আহ্বান এসেছে। এমনকী প্রবাসীর স্ত্রী এই ছেলেকে নিয়মিত টাকা দেয়। গরীব মানুষ; যৌনতার সুখ আর টাকা পেলে নতশির না হয়ে পারে কি?
তিন.
দুই সন্তানের বাবা তার মামীকে নিয়ে উধাও। অনেক পেরেশানীর পরে তাদের উদ্ধার করা হলো। দুজনের বক্তব্য শুনে স্তম্ভিত। টানা ১৩ বছর ধরে তারা শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে আছে। লাজ-লজ্জা ফেলে ছেলে বলছে মামীর গর্ভে তার সন্তান আছে (মামা জানে তারই সন্তান)। এক একটা পরকীয়া ঘটনার বর্ণনা শুনে স্তম্ভিত হচ্ছি, বুকের গহীনে খচখচ করে উঠছে। আকাশ সংস্কৃতি আর ইন্টারনেট-প্রযুক্তি আমাদের গ্রামীণ সমাজকাঠামোকেও ধ্বংসের অতল গহ্বরে নিয়ে যাচ্ছে। স্বামী-স্ত্রীর দীর্ঘদিনের দূরে থাকা, গ্রামীণ অবাধ মেলামেশা, নৈতিক শিক্ষার ঘাটতি পরকীয়াকে উৎসাহিত করেছে। আগামীদিনের পরিশীলিত সমাজ গঠনে পরকীয়া এক বিশ্রী চ্যালেঞ্জ হিসেবে সামনে এসেছে। মুখ বুঝে থাকলেই সব সমাধান হয়ে যায় না।
বয়স, শ্রেণি, পেশা ছাপিয়ে এক জঘন্য খেলায় মেতে উঠেছে শত শত, হাজারো মানুষ। তাৎক্ষণিক বিচার খুব সহজ (বুঝানো কিংবা বিচ্ছেদ); কিন্তু এই সংকটের স্থায়ী সমাধানে যেতে পারছি না! প্রযুক্তির উন্মাদনা গ্রামেও ভীষণ! সবগুলো পরকীয়ার সাথে প্রযুক্তির সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছি। এটা এমন এক ঘৃণ্য ইস্যু, পরিবারের অনেকে জানার পরেও কেবল মানসম্মানের ভয়ে হজম করছে, ডুকরে কেঁদে মরছে। ডিভোর্স দিচ্ছে অন্য ইস্যুকে সামনে এনে, কিন্তু পেছনের ঘটনা পরকীয়া। ছেলে-মেয়ে উভয়দিক থেকেই ডেস্পারেট যৌনাকাঙ্ক্ষা প্রকাশিত হচ্ছে। কোনো কারণ ছাড়াই অন্যের স্ত্রী-স্বামীর দিকে হাত বাড়াচ্ছে স্রেফ অনিয়ন্ত্রিত খাহেশ থেকে।
তরুণ-তরুণী তো বটেই, বয়স্ক মানুষরাও ভয়াবহ এই বিকৃত অভ্যাসের দাস হচ্ছে। গ্রামীণ সমাজেও এখন চারদিকে সন্দেহ-সংশয়! কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছে না। নিকটাত্মীয়রাও আর নিরাপদ নয়! পুরো পারিবারিক জীবনপ্রণালী ভেঙে পড়ছে। কী এক বিভৎস অবস্থা! আজ থেকে পাঁচ বছর আগেও প্রেমঘটিত বিষয়াদির বিচার করতে হতো। মানে অবিবাহিত তরুণ-তরুণী প্রেম করত; হয় তাদের বিয়ে দেওয়া হতো, নয়তো বুঝিয়ে কিংবা শাসিয়ে এই সম্পর্ক থেকে দূরে নেওয়া হতো। কিন্তু এখন অবস্থা নিয়ন্ত্রণের বাহিরে। প্রেম যেন ওল্ড আইডিয়া, সরাসরি যৌন সম্পর্ক। বছরের পর বছর অন্যের স্ত্রী/স্বামীর সাথে যৌন সম্পর্ক অব্যাহত রাখছে। এখানে কারও কোনো সমস্যা হচ্ছে না। একজন ছেলেকে কোনো মেয়েকে বিয়ে করতে হচ্ছে না, ভরণপোষণের দায়িত্ব নিতে হচ্ছে না। আবার মেয়েকেও স্বামীর সংসার ফেলে অন্যের ঘরে যেতে হচ্ছে। স্ব স্ব ঘরে থেকে বৈধ স্বামী/স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক রেখেও অন্যের স্ত্রী/স্বামীকে ভোগ করা যাচ্ছে বাধাহীন।
খুবই সিম্পল মেথড।
প্রায়শই তারা গ্রাম থেকে শহরে যাচ্ছে। শহরে কোনো বন্ধুর বাসায় উঠছে। আরও সাহসী যারা, তারা নিজ বাড়িতেই ডেকে নিচ্ছে৷ খুব ডেস্পারেট। এমনকী অনেকে প্রকাশ্যে বলে বেড়াচ্ছে অবৈধ সম্পর্কের কথা। অনেক অভিযুক্ত শালিসী বৈঠকে ডেস্পারেটলি সব স্বীকার করে এই অন্যায় কাজ অব্যাহত রাখার ধৃষ্টতাও দেখাচ্ছে! মানে, সে বেপরোয়া, সমাজ-আইন কিচ্ছু মানার মতো অবস্থার আর নেই তারা! এ যেন এক আইয়্যামে জাহেলিয়াত! করোনা পরিস্থিতির চেয়ে পরকীয়া পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে৷ আল্লাহর দাসত্ব ভুলে নফসের দাসত্বে মাতোয়ারা অনেক অনেক বনি আদম! আমাদের ধ্বংস অনিবার্য!
ফেসবুক থেকে প্রাপ্ত তথ্যের আলোকে ডেস্ক রিপোর্টঃ