“কাজই করি দিন আর রাত টুকু, বাকি সময় তো ফ্রিই থাকি।” স্বপ্নবাজ ব্যবসায়ী ও কেয়ার ফিডের সফল গ্রাহককে নিয়ে তামিম গ্রুপের পরিচালকের উচ্ছাস প্রকাশ

পাবনা জেলার চাটমহর উপজেলার সমাজবাজারের বিশিষ্ট স্বপ্নবাজ ব্যবসায়ী ও দেশের সুনামধন্য শিল্প প্রতিষ্ঠান তামিম গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান তামিম এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লি: এর উৎপাদিত “কেয়ার ফিড” এর সফল ডিলার, এলাকায় আলোচিত খামারী, সাহসী উদ্যোক্তা মকবুল হোসেনকে নিয়ে উচ্ছাস প্রকাশ করেছেন তামিম গ্রুপের পরিচালক মো: আরিফুর রহমান। জনপ্রিয় সোস্যাল মিডিয়া ফেসবুকে ব্যক্তি আইডিতে সম্প্রতি একটা স্ট্যাটাস দেয়ার মাধ্যমে তিনি এই উচ্ছাস প্রকাশ করেন। আরিফুর রহমান সেখানে উল্লেখ করেন- তার সাথে (মকবুল হোসেন) যখন আমার প্রথম পরিচয় স্রেফ একজন মাছ চাষী হিসেবেই তাকে আবিষ্কার করেছিলাম রংপুরের সৈয়দপুরের মাছ বাজারে। সেটাও প্রায় ১৭ বছর আগের কথা।

 

মকবুল হোসেন প্রতিষ্ঠিত লেয়ার মুরগীর খামার

মকবুল হোসেন যৎসামান্য কিছু ফিড চাষীদের কাছে বিক্রয় করতেন। এক রকম জোরজবরদস্তি করেই মুরগি পালনে রাজী করিয়েছিলাম মকবুল ভাইকে। মাত্র ৫০০ লেয়ার মুরগি দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন। অনেক উত্থান পতনের এ দীর্ঘ যাত্রায় তার সাফল্য দেখে সমাজ গ্রামে ৫০ হাজার লেয়ার মুরগির একটা বাজার তৈরী হয়ে যায়। নানাবিধ কারণে বেশ কিছু খামারী এখন খামার বন্ধ রাখলেও নিজস্ব গতিতে এগিয়ে যাচ্ছেন মনের দিক দিয়ে এখনো তরুন আমাদের মকবুল ভাই। বিভিন্ন সময় কথায় কথায় উঠে আসত নানা সমস্যার কথা। এই হয়তো ফার্মে কাজ করার লোক পাওয়া যায় না কিংবা নিচু বন্যা প্রবন এলাকা হওয়ায় ফার্ম আরো বড় করার জায়গা হয় না।

আরিফুর রহমান তার স্মৃতিকথায় আরো উল্লেখ করেন- একটা ফার্ম করতে গেলে এ অঞ্চলের জমিতে কমপক্ষে ২০ ফুট পর্যন্ত মাটি ফেলে উঁচু করে নিতে হয়। তা না হলে বন্যার সময় পানিতে ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। কন্ট্রোলড শেডে অল্প জায়গায় বেশি মুরগির পালন কিংবা কম লোক দিয়ে বেশি মুরগি পালনের বিষয়টা তখন আলোচনায় উঠে আসে। মকবুল ভাইয়ের মাথায় কন্ট্রোলড শেডের বিষয়টা এমন ভাবে গেঁথে যাবে তখন হয়তো ভাবিনি। আমাদের প্রতিষ্ঠানের (তামিম গ্রুপ) সম্মানীত চেয়ারম্যান জনাব শাহজাহান আলী স্যারের সাথে বিষয়টা নিয়ে আলাপ করেন। স্যার মকবুল ভাইয়ের আগ্রহ দেখে তাকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি মকবুল ভাইকে সাথে নিয়ে চীন সফর করেন। বিভিন্ন কোম্পানীতে মেশিনারীজ দেখানোর পর বাংলাদেশে ফিরে আসেন। কোভিড ১৯ করোনা ভাইরাসের কারণে কিছুটা দেরী হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সাথে সাথে মেশিনারীজ এল.সি করে নিয়ে আসেন। বর্তমানে মেশিনারীজ সেটিং করা প্রায় শেষ পর্যায়ে। হয়তো আগামী ১ সপ্তাহের মধ্য শতভাগ কাজ শেষ হয়ে যাবে।

মকবুল হোসেনের খামার পরিদর্শন করেন তামিম গ্রুপের পরিচালক আরিফুর রহমান

একটা প্রত্যন্ত গ্রামে অবস্থান করে কিংবা মাত্র ৫০০ মুরগি দিয়ে শুরু করে ১০০% কন্ট্রোলড শেড করা কতটা কঠিন তা এই সেক্টরে যারা কাজ করেন তাঁরাই ভাল বলতে পারবেন। এর জন্য প্রয়োজন হয় সঠিক লক্ষ্য নির্ধারণ, সীমাহীন ধৈর্য, নিরলস পরিশ্রম এবং সর্বোপরি সততা। যার সবই আছে এই মানুষটির মাঝে। প্রায় ২০০ ফুট লম্বা এবং ৩৩ ফুট চওড়া তার এই শেডটিতে তিন লাইন বিশিষ্ট খাঁচায় একই সাথে প্রায় ১৩ হাজার লেয়ার মুরগি পালন করা যাবে। পুরো শেডটি চালাতে মাত্র তিন জন কর্মি হলেই যথেষ্ট। মাত্র তিন জন কর্মি দিয়ে ১৩ হাজারের শেড চালানো কিংবা এত অল্প জায়গায় ১৩ হাজার লেয়ার মুরগি পালন নিঃসন্দেহে অনেক ভাল খবর। এই মানুষটির একটি প্রিয় বাক্য “কাজই করি দিন আর রাত টুকু , বাকি সময় তো ফ্রিই থাকি।” মহান আল্লাহ তায়ালা মকবুল ভাইয়ের মনের ইচ্ছাগুলোকে বাস্তবে রুপ দিতে অনেক বেশি সাহায্য করুন এই কামনা করি।

মকবুল হোসেন প্রতিষ্ঠিত খামারের একটি অংশ

একজন সফল গ্রাহককে নিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় উচ্ছাস প্রকাশ নি:সিন্দেহে বাংলাদেশের কৃষি শিল্পের জন্য ইতিবাচক খবর। সমাজে হাজারো মকবুল হোসেন রয়েছে কিন্তু মকবুল হোসেন যেভাবে তামিম গ্রুপ থেকে গাইডলাইন পেয়ে সাফল্যের শীর্ষে পৌছেন গিয়েছেন- এমন দৃষ্টান্ত বিরল। উক্ত স্মৃতিকথা বহুমাত্রিক সাফল্যের সম্ভবনার কথা জানিয়ে দেয়। ব্যবসার বাইরে দায়িত্বশীলতা, আন্তরিকতা, পরস্পর কল্যাণ কামনার বিষয়টি পাধান্য পেলে ব্যবসাঅঙ্গনে নানামুখি পরিবর্তন আসতে পারে। গ্রাহকের প্রতি দরদ আন্তরিকতার বিচারে আরিফুর রহমানের স্মৃতিকথা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

ফেসবুক থেকে প্রাপ্ত তথ্যের আলোকে ডেস্ক রিপোর্ট:

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *