১২ আগষ্ট কবি মতিউর রহমান মল্লিকের ইন্তেকাল বার্ষিকী
১২ আগষ্ট দেশের ইসলামী সংস্কৃতির পুরোধা কবি মতিউর রহমান মল্লিকের ইন্তেকাল বার্ষিকী। আজ তাঁর ১২ তম মৃত্যু বার্ষিকী। এ উপলক্ষে দেশের বিভিন্নস্থানে কবির রুহের মাগফেরাত কামনা, স্মৃতি চারণ, আলোচনা সভা, গানের আসর ইত্যাদি কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। জাতীয় চেতনার কবি, ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী চির সবুজের কবি মতিউর রহমান মল্লিকের
সংক্ষিপ্ত জীবনীঃ
বাংলাদেশের বিশিষ্ট কবি, গীতিকার এবং ইসলামী সাহিত্য সাংস্কৃতিক আন্দোলনের প্রাণপুরুষ কবি মতিউর রহমান মল্লিক ১৯৫৬ সালের ১ মার্চ বাগেরহাট জেলার রায়পাড়া উপজেলার বড়ইগ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতা মুন্সী কায়েম উদ্দিন মল্লিক, মাতা আছিয়া খাতুন। তিনি বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতি কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ছিলেন। ইসলামী সাহিত্য সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অগ্রসেনানী কবি মতিউর রহমান মল্লিকের হাত ধরেই সাইমুম শিল্পী গোষ্ঠির যাত্রা শুরু। ‘রঙিন মেঘের পালকি’, ‘আবর্তিত স্বর্ণলতা’ ও ‘অনবরত বৃক্ষের গান’ তার কবিতার বই। তার গানের বই হচ্ছে ‘ঝংকার’, ‘যত গান গেয়েছি’। ‘নির্বাচিত প্রবন্ধ’ নামে তার একটি প্রবন্ধ গ্রন্থ রয়েছে। অনেক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন কবি মতিউর রহমান মল্লিক। এর মধ্যে উল্যেখযোগ্যঃ
১.সবুজ মিতালী সংঘ সাহিত্য পুরস্কার,
২.জাতীয় সাহিত্য সংসদ স্বর্ণ পদক,
৩.কলম সেনা সাহিত্য পদক,
৪.আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সাহিত্য পুরস্কার (ফ্রান্স),
৫.বাংলা সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদ পুরস্কার,
৬.কিশোরকন্ঠ সাহিত্য পুরস্কার,
৭.বাংলা সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার ইত্যাদি।
ডীপ কোমায় ছিলেন কবি মল্লিকঃ
ইসলামী সাংস্কৃতিক আন্দোলনের প্রাণ পুরুষ কবি ও গীতিকার মতিউর রহমান মল্লিক মারাত্মক সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে সিসিইউতে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় ছিলেন দীর্ঘদিন। ২০১০ইং সনের ১১ জুলাই ডায়ালাইসিস শেষে বাসায় ফেরার পরপরই তার কার্ডিয়াক এ্যারেস্ট হয়। প্রায় ২৫ মিনিট শ্বাস বন্ধ-মৃত প্রায় অবস্থায় হলে ভেন্টিলেশন সাপোর্ট দিয়ে কয়েক ঘণ্টা তাকে ইবনে সিনা হাসপাতালে রাখা হয়। পরে নেয়া হয় স্কয়ার হাসপাতালে। তারপর ২১ জুলাই স্কয়ার হাসপাতালে কবি মতিউর রহমান মল্লিকের জন্য ৫ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়।
উল্লেখ্য, কবি মতিউর রহমান মল্লিককে ব্যাংকক থেকে হার্টে ৫টি রিং সংযোজন করে দেশে নিয়ে আসার পর বাসায় রেখে সপ্তাহে ৩দিন তাকে ইবনে সিনায় রেখে ডায়ালাইসিস করানো হতো। এভাবে ১ বছর পর পুনরায় ব্যাংককে নিয়ে কিডনী সংযোজনের কথা ছিল। হঠাৎ করেই কাডির্য়াক এ্যারেস্টের ঘটনা ঘটনায় কবি মল্লিক ডীপ কোমায় চলে যান।
কবির ইন্তিকালঃ
‘‘টিক-টিক যে ঘড়িটা বাজে ঠিক ঠিক বাজে-
কেউ কি জানে সেই ঘড়িটা লাগবে কয়দিন কাজে।
ঝক ঝক ফক ফক করে যদ্দিন ঘড়ির চেহারা-
ততদিন তারে কিনতে চায় যে খরিদদারেরা।’’
সেই ঘড়ির মতোই চলে গেলেন চির সবুজের কবি ও গীতিকার, ইসলামী সাহিত্য সাংস্কৃতিক আন্দোলনের প্রাণপুরুষ মতিউর রহমান মল্লিক। ১১ আগস্ট ২০১০ ইং বুধবার দিবাগত রাত ১২:৩০টায় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তিনি ইন্তিকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে, এক ছেলে রেখে গেছেন। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে কবির ভক্তদের মাঝে।
তথ্য ও ছবি সংগৃহিত