জয়পুরহাটে সরকারি গম সংগ্রহের ফলাফল শূন্য

জয়পুরহাটে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দ্বিগন জমিতে গমের আবাদ হয়েছে, উৎপাদনেও ছাড়িয়েছে লক্ষ্যমাত্রা। কিন্তু সরকারি খাদ্যগুদামে গম সংগ্রহ একদমই হয়নি। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার ফলাফল শূন্য। খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা বলছেন, সরকারি দামের চেয়ে বাইরে দাম বেশি থাকায় গম সংগ্রহ হয়নি। অন্যদিকে কৃষকেরা জানান, সরকারিভাবেও গম কেনা হয়, তা তারা জানেন না। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জয়পুরহাট কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে। চাষ হয়েছে ২ হাজার ৩৮৬ হেক্টর জমিতে। আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭ হাজার ৫০ মেট্রিক টন। উৎপাদন হয়েছে ৮ হাজার ১১২ মেট্রিক টন। অর্থাৎ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ৬২ মেট্রিক টন বেশি হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে অভ্যন্তরীণ গম সংগ্রহের আওতায় জেলায় গম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৪৬ মেট্রিক টন। সরকারিভাবে প্রতি কেজি ২৮ টাকা দরে গম কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত ১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত জেলায় গম সংগ্রহ অভিযান চলে। কিন্তু তিন মাসের দীর্ঘ এই সময়ে জেলার ৫টি উপজেলায় এক শতাংশও গম সংগ্রহ হয়নি। গম সংগ্রহ অভিযানের ফলাফল শূন্য দেখানো হয়েছে।

পাঁচবিবি এলাকার চাষি গোলাম রসুল বলেন এবার এক বিঘা জমিতে গম চাষ করেছি। সাধারণত বাজারে গম বিক্রি করি। কিন্তু এই গম সরকার কেনে তা আমরা জানিই না। কীভাবে নেয় সেটাও জানি না। আমরা চাই সরকার প্রান্তিক কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি গম ক্রয় করুক। অপর কৃষক সদর উপজেলার কাশিয়াবাড়ী গ্রামের রমজান আলী বলেন  আমরা গম, ধান সবই চাষ করি। কিন্তু খাদ্যগুদামে গম দেওয়ার কোনো সুযোগ পাই না। গম কেনে তাও জানি না। কোথায় কোন সিন্ডিকেট হয়, আমরা পাত্তা পাই না। বাধ্য হয়ে বাজারে বিক্রি করি। জয়পুরহাট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আহসান কবির এপ্লব বলেন, এ জেলার কৃষকেরা যথেষ্ট পরিমাণে গম উৎপাদন করেন। কিন্তু তারা সরকারি খাদ্য গুদামে গম দিতে পারেন না। কারণ ধান সংগ্রহে খাদ্যগুদাম থেকে যেভাবে প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়, গম সংগ্রহে তেমন প্রচার-প্রচারণা আমরা দেখি না।এ কারণে কখন খাদ্যগুদাম গম নেয় কৃষকেরা জানতে পারে না। তারা যদি খাদ্যগুদামে গম দিতে পারে তাহলে এক দিকে কৃষকরা লাভবান হবেন, অন্যদিকে এ জেলায় গম চাষে কৃষকেরা উৎসাহিত হবেন।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) জ্ঞানপ্রিয় বিদূর্শী চাকমা বলেন, গম সংগ্রহে ঠিক মতোই প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়েছে। গম সংগ্রহের তিন মাস জেলার খোলাবাজারে প্রতি কেজি গম ৩০ থেকে ৩২ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। আর সরকার নির্ধারিত দর ২৮ টাকা। কৃষক যেখানে ফসলের দাম বেশি পাবেন, সেখানেই বিক্রি করবেন। এ জন্য কৃষকরা খাদ্যগুদামে গম বিক্রি করতে না আসায় ।ফলে এবার গম সংগ্রহের ফলাফল শূন্য হয়েছে।

মো: আবু মুসা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *