গুজরাটে স্বাধীনতার ৭৫তম বার্ষিকীতে ১১ ধর্ষককে মুক্তি: বিলকিস বানুর ধর্ষকদের মুক্তির বিরুদ্ধে ভারতে বিক্ষোভ

দুই দশক আগে গুজরাটে মুসলিম নারী বিলকিস বানুকে দলবদ্ধ ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ১১ জনকে মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভারতজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। ২০০২ সালের যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময় বিলকিস ধর্ষিত হয়েছিলেন, ওই দাঙ্গাতেই তার পরিবারের ১৪ সদস্যকে খুনও করা হয়েছিল। ১৫ বছর জেল খাটার পর চলতি বছরের ১৫ অগাস্ট ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বার্ষিকীতে ওই ১১ জন ছাড়া পায়; তারপর থেকেই ভারতজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখা যাচ্ছে। বিক্ষোভগুলোতে হাজার হাজার নারী-পুরুষ বক্তৃতা, স্লোগানে সরকারকে যত দ্রুত সম্ভব ওই ধর্ষকদের মুক্তির সিদ্ধান্ত রদের অহ্বান জানাচ্ছেন। ভারতীয় চলচ্চিত্র তারকা ও নারী অধিকার কর্মী শাবানা আজমি দিল্লিতে প্যারিসভিত্তিক একটি বার্তা সংস্থাকে বলেন, ‘বিলকিস বানুর সাথে যা হয়েছে, তার পরিবারের সাথে যা হয়েছে, আমাদের দেশে আর এমন হোক, তা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে চাই না আমরা। এজন্যই আমরা একত্র হয়েছি এবং আওয়াজ তুলছি।’
দিল্লিতে বিক্ষোভে অংশ নেয়া ছাত্রী অদিতি বলেন, ‘নারীর প্রতি বিদ্বেষ ও পুরুষতন্ত্র এতটাই শক্তিশালী হয়ে উঠেছে, এতটাই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে যে এখন ধর্ষণকেও মানুষ স্বাভাবিক চোখেই দেখছে।’ এ দিকে শতাধিক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা বিলকিস বানুর ধর্ষকদের মুক্তি দেয়ার ঘটনা সব নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতের ক্ষেত্রে বাজে প্রভাব ফেলবে জানিয়ে প্রধান বিচারপতির কাছে চিঠিও দিয়েছেন। ওই ধর্ষণকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত একজন কারাগার থেকে মুক্তি পেতে শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিল; ওই আবেদনের ভিত্তিতে আদালত রাজ্য সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছিল। এর পরই গোধরা জেল থেকে ১১ জনকে মুক্তি দেয়া হয়। ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে, মুক্তির পর ওই ১১ জন লাইন ধরে গোধরা জেলের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে, তাদের আত্মীয়রা তাদের মিষ্টিমুখ করাচ্ছে, কখনো কখনো পা ধরে আশীর্বাদও নিচ্ছে।

সুত্র: দৈনিক নয়া দিগন্ত

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *