মাদরাসা নিয়ে কটূক্তি করায় বিখ্যাত তুর্কি গায়িকা গুলসেন বায়রাক্তার কোলাকোগলু আটক

মাদরাসা নিয়ে কটূক্তি করায় গুলসেন নামের প্রসিদ্ধ এক তুর্কি গায়িকাকে আটক করা হয়েছে। মাদরাসার বিষয়ে ঘৃণা ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়েছে তার ওপর। এরপর গায়িকার বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ নেয় তুর্কি সরকার। ২৬ আগষ্ট শুক্রবার আলজাজিরা জানায়, গুলসেনকে তার ইস্তাম্বুলের বাড়ি থেকে আটক করে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এপ্রিল মাসে ইমাম হাতিপ মাদরাসা সম্পর্কে একটি কনসার্টে তিনি যে মন্তব্য করেছিলেন তার তদন্তের জন্য বিচারক তাকে কারাদণ্ড দিয়ে রিমান্ডে পাঠান। গায়িকার পুরো নাম গুলসেন বায়রাক্তার কোলাকোগলু। তার বয়স ৪৬ বছর। তিনি সমকামিতাকে সমর্থন করেন। খোলামেলা পোশাক পরার কারণে এর আগেও তিনি ব্যাপক সমালোচিত হয়েছেন।

সম্প্রতি তার ওই কটূক্তি-মন্তব্যের একটি ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে। পরে এ সপ্তাহে তা তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের নেতৃত্বাধীন একে পার্টির শীর্ষ সদস্যদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। গুলসেন তুরস্কের জনপ্রিয় গায়িকা হওয়ায়, তার ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান অবমাননা বিষয়ক মামলাটি দেশটির গণমাধ্যমগুলোর শিরোনামে পরিণত হয়েছে। বিতর্কিত মন্তব্যের সময় আয়োজিত অনুষ্ঠানের মঞ্চে উঠে গুলসেন এক অজ্ঞাত ব্যক্তির উদ্দেশে বাজে মন্তব্য করেছিলেন। তিনি বলেছেন, ইমাম হাতিপ মাদরাসায় ওই ব্যক্তির লালন-পালনের কারণে তার বিকৃতি হয়েছিল। তিনি মস্করা ও বিদ্রুপ করে এমন মন্তব্য করেন। একে পার্টির মুখপাত্র ওমের সেলিক বলেছেন, ‘বিকৃতির অভিযোগে সমাজের একটি অংশকে টার্গেট করা এবং তুরস্ককে বিভক্ত করার চেষ্টা করা মানবতাবিরোধী ও অবমাননাকর অপরাধ।’

তবে গ্রেফতারের আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষমা চেয়েছিলেন গুলসেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘(মাদরাসা সম্পর্কে) একটি কৌতুক আমি আমার সহকর্মীদের সাথে শেয়ার করেছি। তাদের সাথে আমি বহু বছর ধরে কাজ করেছি।… এটা যারা সমাজের (ধর্মীয়) মেরুকরণ করতে চায় তাদের দ্বারা প্রচারিত হয়েছে। আমি দুঃখিত যে আমার (বিদ্রুপাত্মক) কথাগুলো (রক্ষণশীল) দূষিত ব্যক্তিদের অভিযোগের উপাদান দিয়েছে। এসব রক্ষণশীল ব্যক্তিরা দেশকে ধর্মীয় মেরুকরণের দিকে নিয়ে যেতে চায়। গুলসেনের আইনজীবী এমেক এমরে এ গায়িকার গ্রেফতারের বিরুদ্ধে আপিল করার এবং তার অবিলম্বে মুক্তি চাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। উল্লেখ্য, ইমাম হাতিপ মাদরাসা একটি প্রাচীন ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। গোটা তুরস্ক জুড়ে এর অসংখ্য শাখা রয়েছে। সেগুলোতে হাজার হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে এবং পড়াশোনা শেষে ইসলামী সেবায় নিয়োজিত হয়। মাদরাসাটি ওসামানিয়া শাসনামল থেকে পরিচালিত হয়ে আসছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *