বগুড়ায় আরডিএ দিচ্ছে প্রশিক্ষণঃ এ্যাকুরিয়াম মাছ চাষে ভাগ্যবদল তরুণদের আগ্রহ উদ্দিপনা বাড়ছে

পুকুরে দানাদার খাবার ছিটানোর সাথেই ঝাঁকে ঝাঁকে রঙ বেরঙের মাছ আসতে শুরু করে খাবারের দিকে। চোখ ধাধানো এসব বাহারি মাছ দেখে চোখ জুরায় উপস্থিত সবার। বেকার যুবকদের ভাগ্য বদলে দিয়েছে এ্যাকুরিয়ামের রঙিন মাছ চাষ। পল্লী উন্নয়ন একাডেমি বগুড়া এ ভাগ্য বদলে মূল কারিগর। বগুড়ায় পল্লী উন্নয়ন একাডেমি চত্বরে তিনটি ছোট পুকুরে চাষ হচ্ছে নানান প্রজাতির প্রায় এক লাখ রঙিন মাছ। প্রশিক্ষন দিয়ে এসব মাছ দেওয়া হচ্ছে বেকার যুবক যুবাদের। তারা নিজেদের পুকুরে এসব মাছ চাষ করছেন অন্য দিকে বিপননে বাজার খুঁজছেন। প্রজাতি এবং প্রকারভেদে এসব মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা থেকে ৫শ টাকায়। একাডেমি থেকে এলাকার অনেকে এসব মাছ সংগ্রহ করে নিজেদের পুকুরে চাষ করছেন, সাবলম্বী হচ্ছেন। অনেকে অল্প সময়ে লাভের দিক বিবেচনা করে এ মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

সৌখিন মাছ বিক্রিতারা জানান, আজ থেকে দশ বছর আগেও সৌখিন মাছ পালনকারিদের শখ পুরন করতে নির্ভর করতে হত বিদেশী আমদানি নির্ভর মাছের উপর। এসব মাছ আসতো থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, শ্রীলংকা, ভারত, জাপান, তাইওয়ান, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া থেকে। এখন এসব মাছের অনেক জাতই পাওয়া যাচ্ছে দেশে। পল্লী উন্নয়ন একডেমি বগুড়ায় এখন পুকুরেই চাষ হচ্ছে কই কার্প, কমেট কার্প, গোল্ড ফিস , গোরামি, এঞ্জেল ফিস, বাটার ফ্লাই জাতের মাছ। পুকুরে অল্প সময়ে বেশী বর্ধনশীল। এই মাছের রেনু থেকে এখানেই হ্যাচিং করে পোনা মাছ তৈরী করে অন্যত্র বিক্রি করা হচ্ছে। এতে অনেক যুবকেরই জীবনের স্বপ্ন পূরন হচ্ছে।

বগুড়া শেরপুর উপজেলার কালসিমাটি গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা রকি জানান, তিনি গ্রেজুয়েশন শেষ করে এই জাপানী কৈ কার্প মাছ চাষ নিয়ে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি বগুড়াতে প্রশিক্ষন নিয়েছেন। এরপর তার বাড়ীর ছোট পুকুরে এই রঙিন জাতের মাছ চাষের উদ্যোগ নিয়েছেন। পল্লী উন্নয়ন একাডেমি থেকে তিনি ছোট পোনা মাছ কিনে এই মাছের চাষ করছেন। ইতোমধ্যেই তিনি কাঁটাবন সৌখিন মাছের বাজারসহ কয়েকটি জেলায় কথা বলেছেন প্রচুর গ্রহক তার থেকে মাছ কিনার কথা জানিয়েছেন। তার আশা তিনি মাছ বিক্রি করে স্বাবলম্বী হতে পারবেন।

আর একজন উদ্যোগী বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার আমতলী গ্রামের শামসুন্নাহার জানান, তিনিও পল্লী উন্নয়ন একাডেমি থেকে এ রঙিন মাছে চাষের প্রশিক্ষন নিয়েছেন এবং এই মাছ চাষ করবেন বলে পুকুর ঠিক করছেন। এছাড়া তিনি পল্লী উন্নয়ন একাডেমি থেকে পোনা কেিন অন্যত্র বিক্রির পরিকল্পনা করছেন। এ বছরই এ ব্যবসায় হাত দিবেন বলে জানান। বগুড়া সদরের বারোপুর গ্রামের শামিম জানান, তিনি এক বছরে এই রঙিন মাছ চাষ করে প্রায় ২ লাখ টাকা আয় করেছেন।

পল্লী উন্নয়ন একাডেমি বগুড়ার মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব খলিল আহমেদ জানান, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনা অনুযায়ী এক ইঞ্চি জমিও জেন পতিত না থাকে এবং দেশে আমদানী নির্ভরশীলতা কমাতে পল্লী উন্নয়ন একাডেমি এই জাপানী জাতের কৈই কার্প মাছ বা এ্যাকুরিয়ামে সৌখিন মাছ চাষে উদ্যোগী হয়েছে। এখন তিনটি পুকুরে প্রায় এক থেকে দেড় লাখ বিভিন্ন প্রজাতির রঙিন মাছ রয়েছে। বড় আকারের মাছ থেকে ডিম পরে হ্যাচিং করে পোনা তৈরী করা হচ্ছে। পল্লী উন্নয়ন একাডেমির উদ্দেশ্য দেশে এ রঙিন মাছ চাষে উৎসাহিত করা. বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান করে দেওয়া। যাতে করে আমদানি নির্ভরশীলতা কমে এবং দেশীয় মুদ্রা সাশ্রয় করা যায় এবং বিদেশে রপ্তানী করে বৈদেশিক মুদ্রাও আয় করা সম্ভব।

বগুড়া অফিসঃ

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *