জয়পুরহাটে নিজের সন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যার পর থানায় আত্মসমর্পণ করলেন মা

জয়পুরহাট পৌর শহরের বারিধারা মহল্লার চার বছরের কন্যা শিশু কনিনিকা পাল হিয়াকে শ^াসরোধ করে হত্যার পর মা মৌমিতা পাল থানায় আত্মসমর্পণ করেছে। নিহত শিশু পাঁচবিবি সোনালী ব্যাংক এর সিনিয়র ক্যাশ কর্মকর্তা নয়ন পাল ও মৌামিতা পালের একমাত্র মেয়ে। পরিবার নিয়ে গত পাঁচ বছর ধরে নয়ন পাল জয়পুরহাট শহরের বারিধারা মহল্লায় তিন তলার একটি ফ্লাটে ভাড়া থাকতেন। বৃহস্পতিবার সকালে ওই ভাড়ার বাসায় মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার সোনালী ব্যাংক শাখার সিনিয়র ক্যাশ অফিসার নয়ন কুমার পালের গ্রামের বাড়ি বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার আমড়া গোহাইল গ্রামে। গত পাঁচ বছর ধরে তিনি পরিবার নিয়ে জয়পুরহাট শহরের বারিধারা মহল্লায় তিন তলার একটি ফ্লাটে ভাড়া আছেন। শ^শুড় বাড়ির সাথে বনিবনা না হওয়ায় বেশ কিছুদিন থেকে পারিবারিক কলহে মৌমিতা পাল মানসিক রোগে ভূগছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে অসুস্থ স্ত্রী ও একমাত্র সন্তান কণিনীকা পাল হিয়াকে বাসায় রেখে তিনি তার কর্মস্থল পাঁচবিবি সোনালী ব্যাংকে যান। সকাল ন’টার দিকে মৌমিতা তার সন্তান হিয়ার গলায় মোবাইল ফোনের চার্জারের তার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। ওই সময় ঝর্ণা রাণী নামের পাশের ভাড়াটিয়া তাদের সন্তানের খোঁজ নিতে গেলে মৌমিতা ঘরের দরজা বন্ধ করে,তা খুলতে বারণ করেন। তার বারণ উপেক্ষা করে ঝর্ণা রাণী ঘরের দরজা খুলে দেখতে পান মৌমিতার শিশুকন্যা হিয়ার নিথর দেহ বিছানায় পড়ে আছে। ওই সময় মৌমিতা বাসার সিঁড়ি দিয়ে নীচে নেমে সোজা থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে। পরে থানা থেকে পুলিশ এসে খোঁজ নিয়ে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। খবর পেয়ে পাঁচবিবি থেকে নয়ন কুমার পাল ছুটে আসেন থানায়। পুলিশ নিহতের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

তাদের প্রতিবেশি ঝর্ণা রাণী বলেন,‘মৌমিতা সকাল সাড়ে ন’টার দিকে নিজ সন্তানকে হত্যার পর বাড়ি থেকে নেমে সোজা থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে। মোবাইলের চার্জার গলায় পেঁচিয়ে শ^াসরোধ করে সে তার সন্তানকে হত্যা করেছে। নয়ন কুমার পাল জানান,পারিবারিক কলহের কারণে তার স্ত্রী মৌমিতা মানসিক বিকারগ্রস্ত। সে বেশ কিছুদিন থেকে মানসিক রোগে ভূগছিলেন। সকালে তিনি স্ত্রী ও সন্তানকে বাসায় রেখে গিয়েছিলেন। পৌণে নয়টার দিকে মেয়ের সাথে তার মোবাইলে কথা হলেও স্ত্রী কথা বলেননি। পরে থানা থেকে তাকে হত্যার বিষয়টি জানিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছে। জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন,‘পারিবারিক কলহে হাতাশা থেকে হত্যাকান্ডটি ঘটতে পারে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। এ ঘটনায় নিহত শিশুর বাবা নয়ন কুমার পাল স্ত্রী মৌমিতা পালকে আসামী করে মামলা করেছে।

 

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *