২১ বছর পর ব্যালটে নেতা নির্বাচন হচ্ছে বগুড়া জেলা বিএনপির

২১ বছর পর ব্যালটে নেতা নির্বাচন হচ্ছে বগুড়া জেলা বিএনপির। আগামীতে এক দফার আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতিতে তৃণমূল ঢেলে সাজানোর পর এবার চলছে জেলা কমিটির নেতৃত্ব বাছাইয়ের কাজ। সেই নেতৃত্ব দখলের জন্য এখন মাঠের নেতাদের ভোট পেতে তাদের দুয়ারে দুয়ারে হাজির হচ্ছেন জেলা সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদ প্রার্থীরা। ২ নভেম্বর জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে তিন পদে জেলার ২৪টি ইউনিটের মধ্যে ২২টি ইউনিটের দুই হাজার ২২২ জন তৃণমূল নেতা ব্যালটে তাদের নেতা নির্বাচন করবেন। এর আগে ১৯৯৯ সালে অর্থাৎ প্রায় ২১ বছর আগে জেলা বিএনপির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগাঠনিক সম্পাদক পদে সরাসরি ভোটগ্রহণ করা হয়। এরপর বগুড়াকে মডেল হিসেবে ধরে সারাদেশে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের কমিটির নেতা নির্বাচন করা হতো। কিন্তুপেরে সেই মডেল আর অনুসরণ করতে দেখা যায়নি।

২ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং সম্মেলন উদ্বোধন করবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। এতে সভাপতিত্ব করবেন সম্মেলন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এ কে এম সাইফুল ইসলাম। এছাড়া কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ অংশ নেবেন। এদিকে সভাপতি পদে দু’জন, সাধারণ সম্পাদক পদে দু’জন ও সাংগঠনিক সম্পাদকের তিনটি পদে সর্বাধিক ১১জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। প্রার্থীরা হলেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও আহ্বায়ক এবং বগুড়া পৌরসভার বর্তমান মেয়র রেজাউল করিম বাদশা (প্রতীক আনারস), সাবেক সভাপতি ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির বর্তমান সদস্য ভিপি সাইফুল ইসলাম ( প্রতীক ছাতা) এবং সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফজলুল বারী তালুকদার বেলাল (প্রতীক দেয়াল ঘড়ি)। সাধারণ সম্পাদক পদে জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলী আজগর তালুকদার হেনা (প্রতীক রিকশা) ও সাবেক সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক এম আর ইসলাম স্বাধীন (প্রতীক মোটরসাইকেল)।

সাংগাঠনিক সম্পাদকের তিনটি পদে ১১জন প্রার্থী হলেন বগুড়া জেলা শ্রমিক দলের সহ-সভাপতি মোশারফ হোসেন স্বপন (সিএনজি চালিত অটোরিকশা) আব্দুল আজিজ হীরা (আম), সহিদ উন নবী সালাম (কাপ পিরিচ) এ বি এম মাজেদুর রহমান জুয়েল (বই), শেখ তাহা উদ্দিন নাহিন (গোলাপফুল), জাহিদুল ইসলাম হেলাল (টিউবওয়েল) কে এম খায়রুল বাশার (মই), মিজানুর রহমান রাজা (কলস), শহিদুল ইসলাম সহিদ (মাইক), আলী হায়দার তোতা (চশমা) ও সোলায়মান আলী (বালতি)। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তার কর্মীরা সকাল থেকে গভির রাত পর্যন্ত জেলার ২২টি ইউনিটে ভোট পেতে বাড়িঘর, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও দলীয় কার্যালয়ে যাচ্ছেন। ভোটাররাও কাউকে নিরাশ না করে সবাইকে আশ্বাস দিচ্ছেন। ফলে সব প্রার্থীই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। ভোট নিয়ে দলীয় কার্যালয়সহ সর্বত্র আলোচনা ও চুলচেরা হিসাব চলছে। কারা নেতৃত্বে আসলে চলমান একদফার আন্দোলন সফল হবে তারও হিসাব কষছেন ভোটাররা। সম্মেলন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এ কে এম সাইফুল ইসলাম বলেছেন, ইতোমধ্যে সার্বিক প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। সম্মেলন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সকলের সহযোগিতা চাই।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৭ এপ্রিল সর্বশেষ সম্মেলনে আংশিক কমিটি ঘোষণা এবং ২০১২ সালের ২৩ অক্টোবর ১৭২ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করে হাই কমান্ড। এই কমিটি মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় ২০১৯ সালে ভেঙে দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে সকল পর্যায়ে ঢেলে সাজানোর সিদ্ধান্ত নেয় হাই কমান্ড। সম্মেলন উপলক্ষে গত শনিবার কাউন্সিলর ও ডেলিগেট কার্ড বিতরণ করেছে সম্মেলন পরিচালনা কমিটি। বগুড়া জেলা বিএনপি কার্যালয়ে প্রতিটি উপজেলা ও পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে কাউন্সিলর ও ডেলিগেট কার্ড বিতরণ করেন সম্মেলন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এ কে এম সাইফুল ইসলাম। এ সময় সম্মেলন পরিচালনা কমিটির উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট এ কে এম মাহবুবর রহমান, হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চন্দন, সদস্য লাভলী রহমান, ডাক্তার মামুনুর রশিদ মিঠু, এ কে এম আহসানুল তৈয়ব জাকির, তৌহিদুল আলম মামুন, মাফতুন আহমেদ খান রুবেল উপস্থিত ছিলেন।

বগুড়া অফিসঃ

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *