সোনালী ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত কালাইয়ের কৃষকরাঃ পাকা ধানের গন্ধে কৃষকদের মনে প্রফুল্লতা
জয়পুরহাট কালাই উপজেলায় আমন ধান কাটা ও ঘরে তোলা নিয়ে চলছে উৎসবের আমেজ । মৃদু মৃদু শীতল বাতাসে পাকা সোনালি আমন ধান দোল খাচ্ছে মাঠে মাঠে। পাকা ধানের গন্ধে কৃষকদের মনে এখন প্রফুল্লতা। উপজেলার মাঠের পর মাঠ এখন সোনালী রঙে পাকা ধানে ভরে আছে। পাকা ধান কাটতে হাতে কাচি নিয়ে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। অনেকেই মাঠ থেকে নতুন ধান বাড়িতে তোলার জন্য খুশিতে আংজ্ঞিনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন কৃষক-কৃষাণীরা। এরই মধ্যে অনেকেই কাটা ও মাড়াইয়ের ধান বাজারে বিক্রি করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ বছর কৃষকেরা প্রথম দিকে ধানের ভালো দাম পাওয়ায় অনেক খুশি হলেও ধীরে ধীরে ধানের বাজার কমতে থাকায় উদ্বিগ্ন কৃষক। কৃষকরা বলছেন তাদের উৎপাদিত প্রতিটি ফসলের যদি ন্যায্যমূল্য না পান তাহলে যে কেউই কৃষি চাষাবাদের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে । ফলে দেশ খাদ্য সংকটে পরবে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কালাই উপজেলায় চলতি আমন মৌসুমে ১১ হাজার ৫শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।এবার আবহাওয়া ভাল থাকায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। এ লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ।
দুর্গাপুর গ্রামের কৃষক রিপন বলেন, ৩ বিঘা মাটিতে স্বর্ণ-৫ ধান লাগিয়েছি। রোগ বালাই তেমন না থাকায় ধান অনেক সুন্দর হয়েছে। আশা রাখছি ফলন অনেক ভাল হবে। তবে ধানের বাজার দিন দিন যেভাবে কমতে শুরু করেছে তাতে চিন্তায় পরেছি। বাসিলাপাড়া গ্রামের তাজুল বলেন, ৩ একর জমিতে ধান লাগিয়েছিলাম আলহামদুলিল্লাহ আশানুরূপ ফলনের চেয়ে এ বছর অনেক ভাল ফলন হয়েছে, এ ফলনে আমি অনেক খুশি। কৃষক উপজেলার জমিনপুর গ্রামের আমিরুল ইসলাম বলেন, আমন ধান কর্তন করে জমিতে আলু লাগানোর জন্য গোবর নিয়ে যাচ্ছি। আলহামদুলিল্লাহ ফলন খুব ভাল হয়েছে। নতুন ধান পেয়ে আমি আনন্দিত। তবে ধানের বাজার যেন ঠিক থাকে সেদিকে সরকারের যথাযথ নজর দেওয়া দরকার।
আলমগীর হোসেন বলেন, এ বছর আশানুরূপ ফলনের আশা করছি। যদি কৃষক তার প্রতিটি ফসলের সঠিক মূল্য না পান তাহলে ফসলের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। এতে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে সরকার অনেক কৃষি পূণ্যর দাম নির্ধারন করলেও কৃষক তার যথাযথ মূল্য পাননা। এ জন্য ধানসহ সরকার কে প্রতিটি ফসলের কৃষকদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে হবে। উপজেলার নুনুজ বাজারের ধান ব্যবসায়ী আঃ হাকিম ও জাহাঙ্গীর জানান, ধানের বাজার প্রথমে দিকে ভাল ছিল। তখন মিলারদের চাহিদাও ছিল ভাল, আমরাও টেনে ধান কিনেছি। ধানের দাম কমে যাওয়ায় আমরা প্রতিমনে ৩০-৪০ টাকা লছ গুনতে হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুণ চন্দ্র রায় বলেন, বেশ কিছুদিন ধরেই আমন ধান কাটা চলছে। ধান কাটা প্রায় শেষ হয়েছে। অত্র অঞ্চলের কৃষক ধান কেটে আলুর চাষাবাদ করবে জন্য দ্রুত ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ বছর কৃষকেরা ধানের ভালো ফলন এবং দাম ভালো পাওয়ায় অনেক খুশি ।
কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধিঃ