বগুড়ায় লটারিতে উত্তীর্ণ হয়েও বাদ: ভর্তির দাবিতে মানববন্ধন
বগুড়ার দুটি সরকারি বিদ্যালয়ে একাধিক আবেদনের কারণে বাদ পড়া শিক্ষার্থীদের ভর্তির সুযোগের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। ২৫ ডিসেম্বর রবিবার বেলা ১১টার দিকে শহরের সাতমাথা চত্বরে বাদ পড়া কিছু শিক্ষার্থী ও তার অভিভাকরা এ মানববন্ধন করেন। অভিভাবকদের দাবি, সফটওয়্যারজনিত জটিলতার দায় শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের ওপর চাপানো হয়েছে। এখানে তাদের একক কোনো দোষ নেই। উত্তীর্ণ হয়েও বাদ পড়ায় শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। জানা গেছে, তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির জন্য গত ১৬ নভেম্বর থেকে ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত আবেদন গ্রহণ করা হয়। তখন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পক্ষ থেকে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের বয়সসীমা ৮ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৯ বছর পর্যন্ত বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বগুড়া জিলা স্কুল ও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ৪১১টি আসনের বিপরীতে ২০ হাজারেরও বেশি আবেদন জমা পড়ে। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ১২ ডিসেম্বর ঢাকায় অনলাইনে লটারির মাধ্যমে ভর্তির জন্য মনোনীত শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। পরদিন ১৩ ডিসেম্বর সকালে ওই স্কুল দুটির কর্তৃপক্ষ লটারিতে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের তালিকা চেক করে দেখে তাতে এক শিক্ষার্থীর নাম ও ছবি একাধিকবার রয়েছে। এমনকি বগুড়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের মেধা তালিকায় প্রথম, দ্বিতীয় এবং ষষ্ঠ ক্রমিকে একই শিক্ষার্থীর নাম ও ছবি ছিল। ওইদিন তাৎক্ষণিক যাচাই-বাছাইকালে স্কুল কর্তৃপক্ষ ভর্তির জন্য লটারিতে নির্বাচিত অন্তত ২০জন শিক্ষার্থির নাম একাধিকবার প্রকাশিত হওয়ার প্রমাণ পায়। ১৪ ডিসেম্বর মাউশি থেকে শিক্ষার্থী, তাদের বাবা-মার নাম এবং ফোন নম্বর অভিন্ন রেখে জালিয়াতির মাধ্যমে শুধু জন্মসনদের নম্বর এবং ইউজার আইডি পরিবর্তন করে আবেদনকারীদের ভর্তি না করতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য নির্বাচিতদের মধ্যে একাধিবার আবেদন এবং বয়স-সীমা অতিক্রমের অভিযোগে দুই প্রতিষ্ঠানে উল্লেখ্যযোগ্য শিক্ষার্থীর আবেদন বাতিল করা হয়। এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ ও শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। মানববন্ধনে অংশ নেয়া একাধিক আবেদনের কারণে বাদ পড়া এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, মাউশি একাধিক আবেদন কেন গ্রহণ করল? এছাড়া ভর্তি বিজ্ঞপ্তির সময় একাধিক আবেদনের ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা ছিল না। হুট করে মাউশির এমন সিদ্ধান্তে আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় পড়ে গেছি। অভিভাবক রেহানা আক্তার বলেন, ১২ ডিসেম্বর বাছাই না করেই কেন ফলাফল ঘোষণা করা হল? এছাড়া চূড়ান্ত তালিকা না করেই লটারিতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের থেকে পূর্বের স্কুলের থেকে ছাড়পত্র নেয়ায় একূল ওকূল দুই কূলই গেল। শফিকুল ইসলাম নামে আরেক অভিভাবক বলেন, সন্তানদের লটারিতে নাম থাকা সত্ত্বেও ভর্তির সুযোগ না পাওয়ায় অনেক অভিভাবক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এছাড়া শিক্ষার্থীরাও মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছে। মাউশির উচিৎ সামনের বছর থেকে নতুন করে নিয়ম নীতি প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করা। এবিষয়ে বগুড়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন বলেন, মাউশির নির্দেশনা অনুযায়ী একাধিক আবেদন করেছে এমন শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে না। পরবর্তী নতুন কোনো নির্দেশনা আসলে সে অনুযায়ী কাজ করা হবে।
বগুড়া অফিসঃ