নির্মানের ১৮ বছরেও চালু হয়নি বগুড়ার শিবগঞ্জের আলিয়ারহাট হাসপাতাল
খালিদ হাসান, শিবগঞ্জ (বগুড়া) থেকেঃ
নির্মানের ১৮ বছরেও চালু হয়নি বগুড়ার শিবগঞ্জের ২০ শয্যা বিশিষ্ট আলিয়ারহাট হাসপাতাল। শিবগঞ্জের প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নির্মিত এই হাসপাতালটি চালু না হওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে লাখো মানুষকে। কর্তৃপক্ষ বলছে, কোন প্রকার বরাদ্দ ও লোকবল নিয়োগের অনুমতি না পাওয়ায় চালু করা সম্ভব হচ্ছে না হাসপাতালটি। জানা যায়, ২০০৫ সালে শিবগঞ্জ বন্দর থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দূরে ২০ শয্যার আলিয়ারহাট হাসপাতাল নির্মিত হয়। এতে ব্যয় হয় চার কোটি ৩২ লক্ষ টাকা। আধুনিক অপারেশন থিয়েটারসহ চিকিৎসা সেবার অনেক যন্ত্রপাতিও স্থাপন করা হয় হাসপাতালটিতে। কিন্তু লোকবলের অভাবে আজ অবধি চালু হয়নি হাসপাতালটি।
বর্তমানের এই হাসপাতালে একজন আবাসিক মেডিকেল অফিসার, একজন মেডিকেল অফিসার ও একজন উপসহকারী মেডিকেল অফিসার বহির্বিভাগে সাধারণ রোগীদের স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। সেখানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বরাদ্দ সাপেক্ষে ওষুধ সরবরাহ করা হয়। জরুরী রোগীদের রেফার করা হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এদিকে ২০ শয্যা বিশিষ্ট আলিয়ারহাট হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা চালুর দাবিতে সম্প্রতি মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। আটমূল, বিহার,কিচক, শিবগঞ্জ সদরসহ চার ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতের দাবীতে হাসপাতালের সামনে ঘন্টাব্যাপী এ কর্মসূচি পালন করে তাঁরা। মানববন্ধনে বক্তারা চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ভোগান্তির কথা জানান। হাসপাতালের বহির্বিভাগে দায়িত্ব পালনকারী উপসহকারী মেডিকেল অফিসার রফিকুল ইসলাম জানান, বর্তমানে জ্বর,সর্দি, কাশির মতো সাধারণ রোগের চিকিৎসা দেয়া হয়। হাসপাতালের চিকিৎসার যন্ত্রপাতি শিবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থানান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে আলিয়ার হাট হাসপাতালের নামে কোন ওষুধের বরাদ্দ নেই। শিবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে কিছু ওষুধ দেয়, সেটা দিয়েই আমরা স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে যাচ্ছি।
এ ব্যাপারে আলিয়ারহাট হাসপাতালের আরএমও ডা. ডা: সুতনু রায় জানান, বিএনপি সরকারের আমলে বগুড়ার নন্দীগ্রাম, আদমদীঘীর সান্তাহার ও শিবগঞ্জের আলিয়ারহাটসহ সারাদেশে একযোগে ২৩ টি ২০ শয্যার হাসপাতাল নির্মান করা হয়। নানা কারনে যার একটিতেও চিকিৎসা সেবা শুরু হয়নি। আলিয়ারহাট হাসপাতালে কিছু লোকবল নিয়োগ করা হয়েছিলো শুরুতে। কিন্তু ওষুধ বরাদ্দ ও পর্যাপ্ত সরঞ্জাম না থাকায় হাসপাতালটি চালু করা সম্ভব হয়নি। পরে নিয়োগকৃত চিকিৎসকদের স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। তবে হাসপাতালটি চালুর ব্যাপারে দাপ্তরিক কাজ চলছে। আশা করছি বছরখানিকে মধ্যেই সকল সংকট সমাধান করে চালু করা সম্ভব হবে। শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে কুলসুম সম্পা জানান, পর্যাপ্ত লোকবল না থাকায় আলিয়ারহাট ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি চালু করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে একজন আরএমওসহ বেশ কয়েকজন চিকিৎসক বহির্বিভাগে চিকিৎসা দিচ্ছেন। হাসপাতালটি চালু করার জন্য ইতোমধ্যেই মন্ত্রণালয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে।