কালাইয়ে কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা
জয়পুরহাট প্রতিনিধি:
মুসলমানদের ধর্মের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা। এই কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে জয়পুরহাটে কালাই উপজেলার গবাদিপশু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রান্তিক খামারিরা।এ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের অনেকেই ছোট-বড় গরুর খামার তৈরি করে ভাগ্যের পরিবর্তন করছেন।লাভবান হওয়ার আশায় এ উপজেলার খামারিরা এখন থেকেই গবাদিপশু তথা গরু-ছাগল হৃষ্ট-পুষ্ট করতে শুরু করেছেন।
কিন্তু অন্যান্য ব্যবসার তুলনায় এ এলাকায় কৃষকরা গরু পালনে বেশি উৎসাহী হয়ে থাকেন,তাঁর কারণ একসাথে অনেক পুঁজি লাগে না, দিনে দিনে স্বল্প খরচ করার কারণে খামারিদের বাড়তি চাপ কম হয়। এবং বছর শেষে একসাথে অনেকগুলো টাকা হাতে পাওয়ায়। আর মাত্র কয়েক দিন পরেই পবিত্র ঈদুল আযহা তাই কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে খামারিরা যত্নসহকারে গবাদিপশু গুলো লালন পালনে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
কালাই উপজেলা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, আসন্ন কোরবানী ঈদের জন্য প্রায় ৫৫ হাজার ৮শত ১২টি পশু বাণিজ্যিক ও পারিবারিকভাবে পালন করেছেন খামারী ও গৃহস্থরা। এর মধ্যে কালাই উপজেলা চাহিদা রয়েছে২৬ হাজার ৮শত ৩৫টি। এর মধ্যে গরু ৯ হাজার ২শত ৪৪টি ও মহিষ ২৩টি, ৩৬ হাজার ৬শত ৮০টি ছাগল,ভেড়া ৯ হাজার ৮শত ৬৫টি, পালন করা হয়েছে। যা চলতি বছরের কোরবানির লক্ষ্যমাত্রা ছাঁড়িয়েও দেশের বিভিন্ন হাটও বাজারে পাঠানো সম্ভব বলেন।
এ উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউনিয়ন হাতিয়র গ্রামের খামারি আলী আনছার বলেন,আমার খামারে ৯টি গরু আছে। আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে কোরবানির পশু পালনকারী বড়-ছোট সব খামারি এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রত্যেক খামারি তাদের প্রিয় পশুটি সর্বোচ্চ দামে বিক্রি করতে শেষ সময়ে পশুর পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
এ উপজেলার জিন্দারপুর ইউনিয়নে হাজীপুর গ্রামের খামারি আব্দুল কাদের বলেন, চার মাস আগে মোটাতাজা করার জন্য পাঁচটি গরু কিনেছি। একেকটি গরু প্রায় ৯০হাজার থেকে এক লক্ষ চল্লিশ হাজার টাকা করে কেনা। ঈদের আগে শেষ মুহূর্তে গরু মোটাতাজা করছি। ভারতীয় গরু না এলে আমরা একটু লাভবান হতে পারব। সরকারের কাছে আবেদন, ঈদের আগে যেন ভারতীয় গরু বাংলাদেশে না ঢুকে।
এ উপজেলার আরেক খামারি আবু বাশার চঞ্চল বলেন, আমার খামারে ১৪টি গরু রয়েছে। এ এলাকায় বেশিরভাগ খামারি দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করছেন। সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে ঘাস-খড়ের পাশাপাশি খৈল ও ভুসি খাওয়ানো হচ্ছে। গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে গরুতে লাভ কিছুটা কমে গেছে। এ বছর কোরবানি উপলক্ষ্যে চারটি গরু পালন করছি। আশা করি এবারও ভালো দাম পাব।
উদয়পুর ইউনিয়ন টাকাহুদ গ্রামের খামারি খয়বর রহমান বলেন, আমাদের এখানে দেশী ও বিদেশি জাতের প্রায় ১০টি গরু রয়েছে। এই গরুগুলো দেশীয় পদ্ধতিতে পালন করে আমরা কোরবানির বাজারে ছেড়ে দিবো তাই খুব ব্যস্ত সময় কাটছে।
এ বিষয়ে কালাই উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ হাসান আলী গ্রামীণ আলোকে বলেন,এ উপজেলার খামারিগন গবাদিপশু মোটাতাজাকরনে স্টেরয়েড বা কোন হরমোন ব্যবহার করেন না। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণীসম্পদ দপ্তর হতে প্রশিক্ষণ ও নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে।এবং পশু মোটাতাজা করণের জন্য প্রত্যেক খামারিকে বিশেষ ভাবে ঘাস চাষের জন্য বিশেষ ভাবে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।