চতুর্থ ধাপে বগুড়ার তিন উপজেলা পরিষদের ভোট গ্রহণ শুরু

বগুড়া অফিস:
বুধবার সকাল ৮টা থেকে চতুর্থ ধাপে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদের বগুড়ার শেরপুর, ধুনট ও নন্দীগ্রাম উপজেলার নির্বাচন শুরু হয়েছে । নির্বাচন উপলক্ষে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে মঙ্গলবার। তিন উপজেলার মোট ২৪৬ টি কেন্দ্রে একযোগে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ। নেয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে প্রশাসন।
তবে এ তিন উপজেলার ২৪৬টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৭৭টি গুরুত্বপূর্ণ(ঝুঁকিপূর্ণ) হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। ব্যলট পেপারের মাধ্যমে সকাল ৮ টা থেকে শুরু হওয়া এ ভোট গ্রহণ চলবে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত। বগুড়ার এই তিন উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ১২ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৩ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান (সংরক্ষিত) পদে ১১ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
শেরপুর উপজেলায় ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা মিলে ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১০৭টির মধ্যে ৩০টি কেন্দ্র অধিক গুরুত্বপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে । এই উপজেলার মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৯৩ হাজার ২৭৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৪৩ হাজার ৭১৩ জন। মহিলা ভোটার ১ লাখ ৪৯ হাজার ৫৫৯ জন এবং হিজড়া ১ জন। এ উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫জন। এদের মধ্যে মোটর সাইকেল প্রতীকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহ জামাল সিরাজী, আনারস প্রতীকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ, জোড়াফুল প্রতীকে যুবলীগ নেতা এম এ হান্নান, ঘোড়া প্রতীকে বগুড়া জেলা বঙ্গবন্ধু সৈনিকলীগের সভাপতি জাকারিয়া তারেক বিদ্যুৎ ও কাপ-পিরিচ প্রতীকে মোঃ রুবেল আহমেদ। ভাইস চেয়ারম্যান পদে চশমা প্রতীকে আলহাজ¦ মুনসী সাইফুল বারী ডাবলু, টিউবওয়েল প্রতীকে তাজুল ইসলাম কিরণ, তালা প্রতীকে নূরে আলম সানি, উড়োজাহাজ প্রতীকে রনি সরকার, মাইক প্রতীকে সাদ্দাম হোসেন ও টিয়াপাখি প্রতীকে বিধান কুমার ঘোষ। এছাড়াও ফুটবল প্রতীকে মর্জিনা বিবি, প্রজাপতি প্রতীকে ফিরোজা খাতুন, কলস প্রতীকে ফাতেমা খাতুন ময়না ও হাঁস প্রতীকে শিখা খাতুন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ধুনট উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ৯০টি ভোট কেন্দ্রের মাধ্যে ৩৩টি কেন্দ্র অধিক গুরুত্বপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৫৫ হাজার ৩২৪জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ২৬ হাজার ৬৩৪ জন ও মহিলা ভোটার ১ লাখ ২৮ হাজার ৬৮৭ জন, হিজড়া ৩ জন। এ উপজেলায় ৩জন চেয়ারম্যান পদ সহ ১১জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ঘোড়া প্রতীকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি টিআইএম নুরুন্নবী তারিক, মোটরসাইকেল প্রতীকে সহ-সভাপতি আব্দুল হাই খোকন ও আনারস প্রতীকে সাধারণ সম্পাদক আসিফ ইকবাল সনি। ভাইস চেয়ারম্যান পদে তালা প্রতীকে ইকবাল হোসেন রিপন, টিউবয়েল প্রতীকে চপল মাহমুদ, মাইক প্রতীকে অমৃত কুমার লিটন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাঁস প্রতীকে নাজনীল নাহার, কলস প্রতীকে পপি সাহা, সেলাই মেশিন প্রতীকে সুলতানা জাহান, ফুটবল প্রতীকে রেবেকা সুলতানা রেবা ও প্রজাপতি প্রতীকে সিমা আক্তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নন্দীগ্রাম উপজেলায় ৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা মিলে ৪৯টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ১৪টি ঝুঁকিপূর্ণ। মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৫৭ হাজার ১৯০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৭৮ হাজার ৩৪৯ জন, নারী ভোটার ৭৮ হাজার ৮৪০ জন ও হিজড়া ভোটার ১ জন। এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৪জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪জন এবং সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে আনারস প্রতীকে রেজাউল আশরাফ জিন্নাহ, মোটর সাইকেল প্রতীকে আনোয়ার হোসেন রানা, ঘোড়া প্রতীকে নজিবুল্লাহ মজনু মন্ডল ও দোয়াত কলম প্রতীকে মো. মাহমুদ আশরাফ। ভাইস চেয়ারম্যান পদে মাইক প্রতীকে দুলাল চন্দ্র মহন্ত, টিউবওয়েল প্রতীকে শুভ আহম্মেদ, চশমা প্রতীকে আমিনুল ইসলাম এবং তালা প্রতীকে এ্যাড. ইলিয়াস আলী। এছাড়াও সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাঁস প্রতীকে শ্রাবনী আকতার বানু ও কলস প্রতীকে খালেদা বেগম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
তিন উপজেলার ভোট কেন্দ্রগুলোতে রয়েছে ৬ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নির্বাচনী এলাকায় র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি, ডিবি ও আনছার বাহিনী মোতায়েন রাখা হয়েছে। এরমধ্যে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ৪জন অস্ত্রসহ পুলিশ, ২জন অস্ত্রসহ আনসার ও ১০জন লাঠিসহ আনসার বা ভিডিপি সদস্য মোতায়েন থাকবে। এছাড়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, স্ট্রাইকিং ফোর্স ও সাদা পোশাকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবে।
এ প্রসঙ্গে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পি.এম ইমরুল কায়েস জানান, বগুড়ার তিন উপজেলা শেরপুর, ধুনট ও নন্দীগ্রাম উপজেলায় নির্বাচন উপলক্ষ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত প্রত্যক্ষ ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হবে। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *