কালাইয়ে বৃষ্টিপাতে তলিয়ে যাওয়া ধান নিয়ে বেকায়দায় কৃষক
অনলাইন ডেস্ক:
জয়পুরহাটে কালাই উপজেলার বিভিন্ন ফসলের মাঠে ছড়িয়েছে পাকা ধানের ঘ্রাণ। পাকা ধান কাটার সময় হয়েছে। কিন্তু কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ফসলের মাঠ তলিয়ে গেছে।অনেকে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ধান ঘরে তুলতে কৃষকরা। ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে দেখা দিয়েছে শ্রমিকের সংকট। এতে ফসল কাটা-মাড়াই নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,এ উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার সহ বেশির ভাগ ফসলের মাঠে পাকা ধানের ঘ্রাণ ছড়িয়েছে। অনেক কৃষক খেতে পাকা ধান কাটছেন। কেউ মাড়াই করছেন। পরিবারের সকল সদস্যরাও ধান ঘরে তুলতে সাহায্য করছেন। ধানের শিষ পেকে যাওয়ায় ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে শ্রমিক সংকটে পড়েছেন চাষিরা।এ ছাড়া বেড়েছে শ্রমিকের মজুরি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে কালাই উপজেলায় ১২ হাজার ৯৫ হেক্টর জমিতে ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল এর মধ্যে ১২ হাজার ৫৫ হেক্টর জমিতে ধান আবাদ হয়েছে। এতে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৭৭ হাজার ৯৬৮.৫ মেট্রিক টন।
এ উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউনিয়ন হাতিয়র গ্রামের কৃষক রুহুল আমীন তিনি বলেন,দূই বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছি।ধান খুব ভালো হয়েছে। শ্রমিক পাওয়া গেলেও অনেক বেশি মজুরি দিতে হচ্ছে। ধান কাটা নিয়ে খুব চিন্তার মধ্যে পড়ে গেছি।
এ উপজেলার আরেক কৃষক জালাল উদ্দীন গ্রামের বলেন,গত বছর এক বিঘা জমির ধান কাটতে খরচ হয়েছে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা। কিন্তু এবছর এক বিঘা জমির ধান কাটতে চার থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা লাগছে। সবকিছুর দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ধান কাটাতে শ্রমিকের মজুরিও বেড়েছে। এতে ধান উৎপাদনে খরচ বাড়ছে।
উদয়পুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের কৃষক আলাউদ্দিন হোসেন বলেন,ধান ভালো হয়েছিল।পাকা ধান প্রায় এক সপ্তাহ আগে কেটে ক্ষেতেই রোদে শুকাতে দিয়েছিলাম।কিন্তু ঝড়-বাদল শুরু হওয়ায় কাটা ধান আর বাড়ি আনা সম্ভব হয়নি। এখনো ক্ষেতে জমে পানি। ধানগাছ পচে যাচ্ছে। অনেক ধানে অঙ্কুর গজিয়েছে।ধান নিয়ে খুবই বিপদে আছি।
কৃষকরা আরও বলেন,চলতি বোরো মৌসুমে ধান কাটা-মাড়াই করার জন্য পর্যাপ্ত শ্রমিক না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন তাঁরা। একদিকে প্রয়োজনের তুলনায় কৃষি-শ্রমিক মিলছে কম,অন্যদিকে মজুরি দিতে হচ্ছে বেশি। ধান চাষে সার, তেল, কীটনাশকসহ যাবতীয় ব্যয় মিটিয়ে উৎপাদিত ধান বিক্রি করে খরচের টাকা উঠছে না তাঁদের। ধান আবাদে লোকসান গুনছেন কৃষকরা।ভেজা ধান শুকানো নিয়েও রয়েছে বেশ দুর্ভোগ।
কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অরুণ চন্দ্র রায় বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে পুরোদমে ধান কাটা সম্ভব হচ্ছে না। আবহাওয়া ভালো থাকলে আগামী ১০ দিনের মধ্যে ধান কাটা শেষ হবে। তবে শ্রমিক সংকট আরও প্রবল হতে পারে। এ অবস্থায়
আমরা আধুনিক প্রযুক্তির কম্বাইন্ড হারভেস্টর মেশিনে ধান কাটতে কৃষকদের উৎসাহিত করছি।