বদলগাছী উপজেলার সদর ইউনিয়নে মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদানে চেয়ারম্যানের অনিয়ম

বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি:

দরিদ্র ও স্বামী কাজ করতে অক্ষম, এমন নারীদের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা দেওয়ার কথা থাকলেও সরকারি নিয়ম কে বৃদ্ধাঙ্গুলী ।  জানা গেছে নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার সদর ইউনিয়নে  মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদানে স্বজনপ্রীতিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সরকারি চাকুরীজিবি ও ধনীরা ভোগ করছেন এই ভাতা।

গত ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে চুড়ান্ত তালিকায় স্থান পেয়েছে বদলগাছী সদর ইউনিয়নে এমন কয়েকজন সরকারি  সুবিধাভোগী । নগদ হিসাবে প্রতি মাসে টাকা পাঠায় সরকার। সন্তান ও মায়ের পুষ্টিকর খাবারের জন্য প্রতি মাসে ৮০০ টাকা করে তিন বছরে মোট ২৮ হাজার ৮০০ টাকা দেওয়া হয় বলে মহিলা বিষয়ক অফিস সুএে জানা যায় ।

মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের তালিকা অনুযায়ী অনুসন্ধানে দেখা যায়, উপজেলা সদর ইউনিয়নের সোহাসা গ্রামের সোনা মিয়ার স্ত্রী কেমি বানু সরকারি রাজস্বখাতে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসে  আয়া পদে চাকরি করেন, তিনিও পাচ্ছেন মাতৃত্বকালীন ভাতা।  গাবনা গ্রামের নুর মোহাম্মদ রাজু  ফায়ার সার্ভিসে সরকারি বেতনভুক্ত কর্মচারী তার স্ত্রী সুরাইয়া পারভীনও পাচ্ছেন ভাতা। ইউপির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের চাংলা গ্রামের আইজুল ইসলামের স্ত্রী পরিচয়ে শারমিন বানু স্থান পেয়েছে চুড়ান্ত তালিকায়! খোজ নিয়ে জানা গেছে চাংলা গ্রামে আইজুল ইসলামের স্ত্রী পরিচয়ে শারমিন বানু নামে কেউ নেই। তবে এহেন তথ্য গোপন রেখে কিভাবে চুড়ান্ত তালিকায় স্থান পায় কি ভাবে এলাকাবাসী সুএে জানা।

এলাকার  স্বচেতন মহলের দাবি চেয়ারম্যানের যাচাই বাছাই করার ক্ষমতা থাকার পরও এতো বড় অনিয়ম কি হতে পারে।

শুধুকি তাই? আরেক সুবিধাভূগী একই ইউপির গোড়শাহী গ্রামের সাইদা পারভীন নিজ নামে রয়েছে ২৫ বিঘা জমি, স্বামী গোলাম ফারুক সেও প্রায় ৩০ বিঘা সম্পত্তির অধিপত্যের মালিক। তানজিমা বানু স্বামী তছলিম হোসেন গ্রাম ভাতসাইলে আর সি, সি পিলারে ছাদ দেওয়া বাড়ি। নিজ নামীয় ধানী সম্পত্তি রয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ বিঘা, ১ বিঘা পুকুরও রয়েছে এই দম্পতির,  এসেছে তার  নাম ও।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জননী জানান, তাঁরা খুব গরিব। নুন আনতে পান্তা ফুরায়। দিনমজুরি কাজ করে সংসার চালে। অথচ তাঁদের স্ত্রী ও স্বজনেররা আবেদন করেও কখনো মাতৃত্বকালীন ভাতা পাননি।

আরেক গৃহবধূ জানান, তাঁর স্বামী দিনমজুর। দুই সন্তানসহ চারজনের সংসার। প্রথম সন্তানের পর দ্বিতীয় সন্তান পেটে এলে মাতৃত্বকালীন ভাতার আবেদন করেন। পরে জানতে পারেন তালিকায় তাঁর নাম নেই।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন , তাঁরা মাতৃত্বকালীন ভাতাভোগীদের বাছাইয়ের জন্য একটা কমিটি করে দিয়েছেন। ইউপি পর্যায়ে সেই কমিটির প্রধান হলেন চেয়ারম্যান। তাঁরা বাছাই করে উপজেলায় পাঠান।

উপজেলা কমিটির  প্রধান হিসেবে  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। চূড়ান্তভাবে বাছাই করে স্বাক্ষর করেন।  সেখানে কোনো অনিয়ম চোখে পড়লে ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকেন।

সরকারি চাকরি করে এমন পরিবার কে মাতৃত্বকালীন ভাতা সরকারি নীতিমালায় পাওয়ার এক্তিয়ার রাখে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি তদন্ত করে চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে সঠিক ব্যাবস্হা নিব।

বদলগাছী সদর ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি  বলেন তথ্য গোপন রেখে আবেদন করেছেন।যাচাইয়ের ক্ষমতা কে রাখে  জানতে চাইলে তিনি বলেন ইউনিয়ন পরিষদ।

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *