শিবগঞ্জে কুরবানির মাংস নিয়ে দরিদ্রদের দুয়ারে ইউএনও

বগুড়া অফিস:

ঈদুল আজহায় আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দাদের পক্ষে পশু কোরবানি দেওয়া সম্ভব হয় না।অসহায় ও দরিদ্র এসব পরিবার গুলো আত্মীয় স্বজন বা পাড়া প্রতিবেশীদের দেয়া মাংস ঘরে নিয়ে রান্না করে খেয়ে থাকেন। এ ছাড়া সারা বছরে একবারও মাংস কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই অনেক দুঃস্থ পরিবারের।

এবার এমন অসহায় ও দরিদ্র মানুষদের দুয়ারে কোরবানির মাংস নিয়ে হাজির বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা আক্তার। আর এতে আবেগাপ্লুত তাঁরা।

সোমবার (১৭ জুন) ঈদুল আজহার দিন বিকেলে উপজেলার গণেশপুর, ধোন্দাকোলা ও সংসারদিঘী এলাকার আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দাদের ঘরে ঘরে কুরবানির মাংস পৌঁছে দেন ইউএনও তাহমিনা আক্তার।

এসময় সংসার দিঘী আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা আব্দুল কাদের (৪৮) জানান, “হামরা কুরবানী দিতে পারিনা। দিন মজুর দিয়ে খাই। আজ ঈদের দিন। লোক লজ্জায় কারও কাছে মাংস চাইতেও পারছিনা। কিন্তু হঠাৎ করেই দেখি ইউএনও ম্যাডাম হামার বাড়িত আসছে। হাতে গোস্তের ব্যাগ। দেখে চোখে পানি আসছে হামার।”

গণেশপুর আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা জিলহক শেখ(৪৫) বলেন,” মানুষের জমিতে কামলা দেই আমি। দিন আনি দিন খাই। কুরবানি দিতে পারিনা। বছরে একদিনও হয়তো গরুর মাংস কিনতে পারিনি। আজ মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি পেলাম। ইউএনও ম্যাডাম নিজে আসে গোস্ত দিয়ে গেলো। এর চাইতে খুশি আর কি হতে পারে!”

শুধু আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দাদের মাঝেই নয়, উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে তৃতীয় লিঙ্গ ও দুঃস্থ মানুষদের মাঝেও বিতরণ করা হয়েছে কুরবানির মাংস।

এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার জানান, ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে গনেশপুর, ধোন্দাকোলা ও সংসার দিঘী এলাকার আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মাংস বিতরণ করেছি । এছাড়া উপজেলা জুড়ে স্থানীয় মেম্বার-চেয়ারম্যান গনের মাধ্যমে আশ্রয়ন প্রকল্পের ৪৪০ পরিবার, ৫০ জন দু: স্থ এবং ১৫ জন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের মাঝেও মাংস বিতরণ করা হয়েছে।

মাংস বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিমুজ্জামান, বিহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম,শিবগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শহীদ প্রমুখ।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *