বগুড়ায় ব্যাংকে চুরির ঘটনায় গ্রেফতার ৪; উদ্ধার ১০ লাখ টাকা
বগুড়া অফিস:
বগুড়ায় আইএফআইসি ব্যাংকের সিন্দুক ভেঙে ২৯ লাখ টাকা চুরির ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ১৯ জুন থেকে একটানা পাঁচ দিনব্যাপী বগুড়ার সোনাতলা, শিবগঞ্জ, আদমদীঘি ও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় চুরি যাওয়া ১০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- বগুড়া সদর উপজেলার বড় টেংরা এলাকার জাহিদুল ইসলাম, সোনাতলা উপজেলার দক্ষিণ আটকরিয়া এলাকার মো. পাভেল, আদমদীঘি উপজেলার তালশন কুন্ডুপাড়া এলাকার বিপ্লব সরকার মিথুন ওরফে মিঠু এবং গাইবান্ধার ফুলছড়ির সিংড়িয়া এলাকার বিমল রাজভর।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) দুপুর ১টার দিকে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি) সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী।
উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন বগুড়া শহরের মাটিডালী এলাকায় আইএফআইসি ব্যাংকের উপশাখায় সিন্দুক ভেঙে চোরেরা ২৯ লাখ ৪০ হাজার ৬১৮ টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার পরে পুলিশের একাধিক টিম চোরদের ধরতে অভিযান পরিচালনা শুরু করেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে প্রথমে পাভেল এবং পরে পাভেলের দেওয়া তথ্য বাকি আসামিদের গ্রেফতার করে পুলিশ। এদের মধ্যে পাভেলের বিরুদ্ধে দুটি এবং জাহিদুলের বিরুদ্ধে একটি চুরির মামলা আদালতে বিচারাধীন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, ‘ব্যাংকে চুরির ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী জাহিদুল ইসলাম। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী ১২ জুন রাতে মাটিডালী ব্রিজের কাছে রাকিবসহ (ছদ্মনাম) বাকি আসামিরা একত্রিত হয়। এ সময় জাহিদুলের নির্দেশে বিমল এবং রাকিব আইএফআইসি ব্যাংকের পেছনে দিয়ে গিয়ে বিল্ডিংটির আশপাশে পর্যবেক্ষণ করে এবং অপর অভিযুক্তদের ক্লিয়ারেন্স দেয়। পরে জাহিদুল একটি টায়ার লিভারসহ ব্যাংকের বিল্ডিংয়ের পেছনে অবস্থান নেয়। এতে যুক্ত হন মিথুন ও পাভেল। এরপর জাহিদুল প্রথমে ব্যাংকের বিল্ডিংয়ে ওঠে এবং পরে বিমলও তার সঙ্গে প্রবেশ করে। এ সময় বাকি আসামিরা বিল্ডিংয়ের আশপাশে সতর্ক অবস্থানে থাকে। এরপর জাহিদুল ও বিমল নিজেদের পরিচয় গোপন রাখতে মুখে মাস্ক ও মাথা পলিথিন দিয়ে ঢেকে ফেলে। পরে তারা দুজন ব্যাংকের ভেতরে সিন্দুক ভেঙে ২৯ লাখ ৪০ হাজার ৬১৮ টাকা চুরি করে। এ সময় চুরির টাকা তারা ব্যাংকের ময়লা রাখা বস্তায় নিয়ে বের হয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
তিনি আরও বলেন, ব্যাংকে চুরির আগে গত এক মাসে জাহিদুল একাধিকবার আসে । উপশাখায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল নিশ্চিত হয়ে চুরির পরিকল্পনা করে। গ্রেফতারের পর পাভেলের কাছ থেকে ১ লাখ ১ হাজার ৭৭০ টাকা, বিমলের কাছ থেকে ২ লাখ ৯৩ হাজার ২২০ টাকা, মিথুনের কাছ থেকে ১ লাখ ৯১ হাজার ২৫০ টাকা এবং জাহিদুলের কাছ থেকে নগদ ৫ লাখ টাকা এবং চুরির টাকা দিয়ে কেনা এ লাখ টাকা দামের একটি পুরোনো মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী জানান, গ্রেফতার আসামিদের অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ড আবেদন জানানো হবে। এ ছাড়া এ ঘটনায় জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।