বগুড়া থেকে বিদেশে পাঠিয়ে পাশবিক নির্যাতন করে অন্যত্র বিক্রি

বগুড়া অফিস:

সুখে থাকার লোভ দেখিয়ে পাঠিয়েছিলেন লিবিয়ায়। চাকরি হবে হাসপাতালে। এমন কথার উপর ভিত্তি করে পরিবার পরিজন ছেড়ে ভ্রমণ ভিসায় পাড়ি জমান লিবিয়ার মাটিতে। বেশ কিছুদিন একটি হাসপাতালে কাজ হয়, তারপর সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় পাওয়ার প্লান্ট কাজে। কিন্তু সেটি ছিল মূলত প্রতারণার একটি ফাঁদ। পাওয়ার প্লান্টে কাজের নামে মধ্যরাতে ঘুম থেকে ডেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় মরুভূমিতে। তারপর চলে একের পর এক বিভিন্ন কায়দায় পাশবিক নির্যাতন। বদ্ধ ঘরে আটকে রেখে বাংলাদেশে পরিবারকে ফোন দিয়ে চাওয়া হয় মুক্তিপনের দশ লাখ টাকা। নির্যাতিত ছোট ভাই মোঃ সাইদ খন্দকার (২৪) কে উদ্ধারের পর বেরিয়ে আসে এমন লোমহর্ষক কাহিনী। তবে এখনো লিবিয়ার মাটিতে জীবন বিপন্ন অবস্থায় আছে বড় ভাই পাপ্পু খন্দকার। তাদের বাড়ি বগুড়া জেলার দুপচাঁচিয়া উপজেলায়।

এ ঘটনায় জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা (ডিবি) বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার শিহিপুর এলাকার পান্নু মিয়া এবং সোনাতলা উপজেলার স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হক শিপলু সরকারকে গ্রেফতার করেছে। এবং মুক্তিপণ বাবদ নেওয়া ১ লাখ টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থানায় মানব পাচার আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল।

মামলায় বাদী ভুক্তভোগীর ভাই মোঃ রাব্বি খন্দকার জানান, দুঃসম্পর্কের আত্মীয় উজ্জলের মাধ্যমে দুই ভাইকে বিদেশে নিয়ে গিয়ে ভালো বেতনে চাকরি দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন সময় প্রলোভন দিত। পরবর্তীতে উজ্জলের কথা মতে তার দুই ভাইকে বিদেশে পাঠানোর মনস্থির করলে দুই ভাই পাসপোর্ট এর মাধ্যমে ১১ লাখ টাকার বিনিময়ে যান এবং লিবিয়াই যাওয়ার পর তাদের সাথে প্রতারণা করা হয়।

বগুড়ার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার।
উদ্ধার হয়ে বাংলাদেশে আসা সাইদ খন্দকার জানান, বিদেশে তাদের সাথে বিভিন্ন রকমের পাশবিক নির্যাতন করা হতো। সময়মতো খাবার দেওয়া হতো না। টাকার জন্য বাড়িতে বারবার চাপ প্রয়োগ করা হতো। এমনকি রাতে ঘুম থেকে ডেকে তুলে মারধর করা হতো।

ভিডিও কলের মাধ্যমে বড় ভাই পাপ্পু খন্দকার বলেন, এখনো সেখানে তার জীবন বিপন্ন, বারবার তাকে প্রাণনাসের হুমকি দেওয়া হচ্ছে এবং ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ না দিলে তাকে প্রাণে মেরে ফেলবে এমনটি জানিয়েছিলেন লিবিয়াই অবস্থানরত পাপ্পু খন্দকার।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ¯িœগ্ধ আখতার জানান, লিবিয়া এম্বাসির মাধ্যমে তাকে উদ্ধার করে বাংলাদেশে নিয়ে আসার যথাযথ চেষ্টা চলছে সে বর্তমানে ভালো আছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *