কালাইয়ে জাল সনদধারী শিক্ষককে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন
অনলাইন ডেস্ক:
জয়পুরহাটের কালাই ময়েন উদ্দিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো.সাইফুল ইসলাম বকুল দুর্নীতি এবং জাল সার্টিফিকেট নিয়ে শিক্ষকতায় করায় তাকে অপসারণ করার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। কালাই ময়েন উদ্দিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সুশীল সমাজের আয়োজনে রবিবার (১১ আগস্ট) দুপুরে কালাই বাসট্যান্ড চত্বরে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। জানা যায়, ১৯১৩ ইং সালে কালাই পৌরসভার হাসপাতাল গেট এলাকায় ময়েন উদ্দিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ দিন ধরে বিদ্যালয়টি শিক্ষার্থীদের সুনামের সঙ্গে পাঠদান করে আসছে। যার ফলশ্রতিতে বিদ্যালয়টি ২০১৮ সালে জাতীয়করণ করা হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বকুল নানা অনিয়ম দূর্নীতি ও ভুয়া বিএড সনদ দিয়ে শিক্ষকতা করছেন যার ফলে ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টি তার সুনাম হারাতে বসেছে।
কালাই ময়েন উদ্দিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান তালুকদার বলেন, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের ব্যাচেলর অব এডুকেশন (বিএড) সনদটি জাল। আমরা দ্রুত এ শিক্ষককে অপসারন করার জন্য মানবন্ধন করছি। প্রতিষ্ঠানের বর্তমান শিক্ষক মো. মুনসুর রহমান বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাইলফুল ইসলাম বকুল আমাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করেছেন। আমরা প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিতে চাই। কর্তৃপক্ষ যেন দ্রুত ভুয়া সনদধারী এই শিক্ষককে অপসারন করেন।
নাম প্রকাশ করার না শর্তে স্কুলের একাধিক শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে নিয়ে এর আগেও বিভিন্ন পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়েছে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে আমরা এর সমাধান চাই। প্রতিষ্ঠানে কোন বিশৃঙ্খলা চাইনা। আমরা সুন্দর ও সুষ্ঠ পরিবেশে লেখাপড়া করতে চাই। বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীর এক অভিভাবক মোঃইউসুফ মন্ডল বলেন,এই ধরনের ঘটনা আমাদের শিক্ষার মানকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। আমরা চাই প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।
স্থানীয় সুধীজন মোঃসিরাজুল ইসলাম বলেন,এটি অত্যন্ত লজ্জাজনক একটি ঘটনা। একজন শিক্ষক যদি জাল সনদ ব্যবহার করে চাকরি নেন,তাহলে আমাদের সন্তানদের কি শিক্ষা দেবেন? আমরা অবিলম্বে তার অপসারণ চাই এবং তার স্থলে একজন যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানাই। অভিযোগ অস্বীকার করে কালাই ময়েন উদ্দিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বকুল বলেন, জয়পুরহাট চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা হয়েছিলো জাল সনদ কেন্দ্র করে সেই মামলায় আমার সনদ বৈধ বলে ঘোষণা করেন ম্যাজিষ্ট্রেট। অভিযোগ ওঠার পর বিভিন্ন দপ্তর থেকেও আমার বিএড সনদ একাধিকবার যাচাই করেছে। সবাই সঠিক পেয়েছে।
আমার সকল কাগজপত্র সঠিক থাকায় যাচাই বাচাই করে আমার চাকরিও জাতীয়করণ করা হইছে।কালাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মোনোয়ারুল হাসান বলেন,শুনেছি সাইফুল ইসলামের সনদের বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্টে মামলার শুনানি রয়েছে। তবে তাঁর সনদের সঠিকতা নিয়ে সন্দেহ আছে। দলীয় প্রভাবের কারণে তাঁর সনদের বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত করা সম্ভব হয়নি।জয়পুরহাট জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার রুহুল আমিন (ভারপ্রাপ্ত) জানান ,অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে তদন্ত শেষে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।শিক্ষার মান ধরে রাখতে আমাদের প্রশাসন সর্বদা সতর্ক থাকবে।