এবি পার্টির প্রথম জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত

ঢাকা প্রতিনিধি:

আমার বাংলাদেশ AB পার্টির (এবি পার্টি) প্রথম জাতীয় কাউন্সিলে বিপুল ভোটের ব্যবধানে দলের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জু। জেনারেল সেক্রেটারি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। তাঁরা আগামী তিন বছর দায়িত্ব পালন করবেন।

গত শনিবার দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এবি পার্টির প্রথম জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করে দলটির অভ্যন্তরীণ নির্বাচন কমিশন। গতকাল শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এবি পার্টির চেয়ারম্যান পদে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। সারা দেশের কাউন্সিলররা সেখানে ভোট দেন। প্রবাসী ও অসুস্থ কাউন্সিলররা ভোট দেন অনলাইনে।

এবি পার্টির চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাঁরা হলেন দলের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী, প্রতিষ্ঠাতা সদস্যসচিব মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জু ও যুগ্ম আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম। মোট ২ হাজার ৮০৬ ভোটারের মধ্যে ভোট দেন ১ হাজার ৬৮৯ জন। এর মধ্যে ৪৫টি ভোট বাতিল হয়।

এবি পার্টির প্রথম জাতীয় কাউন্সিলের উদ্বোধন করেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ পরিবার, মুক্তিযোদ্ধা ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
চেয়ারম্যান পদে ১ হাজার ৪০০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জু। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী এ এফ এম সোলায়মান চৌধুরী পেয়েছেন ২১১ ভোট আর দিদারুল আলম পেয়েছেন ৩৩ ভোট।

এর আগে গতকাল চেয়ারম্যান পদে ভোট গ্রহণের পর রাতে জেনারেল সেক্রেটারি পদে নির্বাচনের আয়োজন করা হয়। সেখানে ভোটার ছিলেন গত মাসের শেষে নির্বাচিত এবি পার্টির নির্বাহী কমিটির ২১ সদস্য। তবে জেনারেল সেক্রেটারি পদে অন্য কোনো প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।

আজ চেয়ারম্যান ও সেক্রেটারি পদের ফলাফল ঘোষণার পাশাপাশি ২১ জন নির্বাহী পরিষদ সদস্যেরও নাম ঘোষণা করা হয়।

উদ্বোধনের পরেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবি পার্টি’র আহবায়ক প্রফেসর ডাঃ মেজর (অবঃ) আব্দুল ওহাব মিনার। তিনি পার্টি গঠনের ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, আজকের কাউন্সিলে উপস্থিত নেতাকর্মী ভাই ও বোনেরাই আমাদের দলকে আজকের এই অবস্থানে নিয়ে এসেছেন।
তিনি সকল নেতাকর্মী ও উপস্থিত সকল রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

এবি পার্টির কাউন্সিলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ভয়াবহ দানবের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি‌। নতুন দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছি। এটা যাতে নষ্ট না হয়ে যায়, সেই চেষ্টা করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘১৬ বছর ধরে আমরা গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করেছি। আমাদের কোনো বিভেদ নেই। তবে আমাদের ঐক্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করা হয়েছে। সেটা পারবে না। আমরা এগিয়ে যাব‌। আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। হঠকারী সীদ্ধান্ত না নিই।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভয়াবহ দানবের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি‌। নতুন দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছি। এটা যাতে নষ্ট না হয়ে যায়, সেই চেষ্টা করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘১৬ বছর ধরে আমরা গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করেছি। আমাদের কোনো বিভেদ নেই। তবে আমাদের ঐক্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করা হয়েছে। সেটা পারবে না। আমরা এগিয়ে যাব‌। আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। হঠকারী সীদ্ধান্ত না নিই।’তিনি বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকারেই সমর্থন করছি। তবে দেশের অর্থনীতির অবস্থা ভালো না, রাজনৈতিক অবস্থাও ভঙ্গুর। আমরা সংস্কার চাই না, এটা ভুল। আমরা সংস্কারও চাই, দ্রুত নির্বাচনও চাই। কারণ, নির্বাচন হলে সব সংকট কেটে যাবে।’
আমার বাংলাদেশ পার্টি’র কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে আরও বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, নাগরিক কমিটির আহবায়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, এলডিপির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. রেদোয়ান আহমেদ, এনডিএমের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমেদ আব্দুল কাদের, গণঅধিকার পরিষদের সেক্রেটারি রাশেদ খান, ১২ দলীয় জোটের মোস্তফা জামাল হায়দার, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সুকোমল বড়ুয়া, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন, জাগপার সহ সভাপতি রাশেদ প্রধান, শহীদ পরিবারের মধ্য থেকে বক্তব্য রাখেন শহীদ নাজমুল কাজী’র স্ত্রী মারিয়া সুলতানা রাখি, আহতদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আসিফ আদনান, উপস্থিত ছিলেন শহীদ বাপ্পীর বোন, উমায়মা আহমেদ, মা, সুরাইয়া বেবি, শহীদ সিফাত এর বাবা কামাল হাওলাদার, শহীদ তামিমি এর বাবা মান্নান হোসেইন, শহীদ মোঃ ফজলুর স্ত্রী সুরাইয়া, শহীদ জিসানের মা
মিসেস জেসমিন আক্তার, শহীদ বোরহানের ভাই আমানত উল্লাহ বাবুল, যাত্রাবাড়ীতে আহত মোঃ মেহেদী হাসান শুভ সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *