কালাইয়ে দলবেঁধে বোরো ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত কৃষকরা

অনলাইন ডেস্ক:

মাঘ মাসের কনকনে শীতকে উপেক্ষা করে চলতি বোরো মৌসুমে জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার সহ ধানের চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। বাজারে আমন ধানের দাম ভালো পাওয়া এবার বোরো ধান চাষে ঝুঁকেছেন কৃষকরা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠে ধানের কচি চারার সবুজ গালিচা, কোথাও কোথাও গভীর নলকূপ থেকে চলছে পানিসেচ, ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষের কাজ, মই দিয়ে করছে জমি সমান। আবার বোরো ধান রোপণের জন্য বীজতলা থেকে তোলা হচ্ছে ধানের চারা। কৃষকদের শরীরে রয়েছে শীতের হালকা পোষাক, মাথায় গরম কাপড়। কৃষাণ-কৃষাণীরা রয়েছে ফুরফুরে মেজাজে। কেউবা জমিতে হাল চাষ দিচ্ছে, কেউবা জমির আইলে কোদাল মাড়ছে, কেউ জৈব সার দিতে ব্যস্ত, আবার কেউ সেচের জন্য ড্রেন নির্মাণ কিংবা পাম্পের বা শ্যালো মেশিনের জন্য ঘর তৈরি করছে। অনেকে তৈরি জমিতে পানি সেচ দিয়ে ভিজিয়ে রাখছে, কেউ বীজতলা থেকে নানা জাতের বোরো ধানের চারা তুলে রোপণ করছে। শীত উপেক্ষা করে কাক ডাকা ভোর থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোমর বেঁধে মাঠে কাজ করছেন কৃষকেরা।

এ উপজেলার কয়েকজন কৃষকরা বলেন, জমিতেই ধান রোপনের জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। বাজারে ডিজেল তেল ও কীটনাশক ওষুধের দাম বৃদ্ধি ও বিদ্যুৎ চালিত গভীর নলকূপের মাধম্যে পানি সেচের নেওয়ায় কৃষকদের ধান চাষে বিঘা প্রতি এক থেকে দেড় হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ গুনতে হচ্ছে।এসবের দাম কমে গেলে কৃষকরা ধান চাষে অধিক লাভবান হবেন বলে আশা করেন।

কালাই উপজেলার আহম্মেদাবাদ ইউনিয়নের হাতিয়র গ্রামের কৃষক কাজী আনোয়ারুল হক মামুন বলেন, ৫বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলেও এ বছর বোরো ধান চাষে খরচ অন্যান্য বছরের চেয়ে দিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, বলে খানিকটা চিন্তিত আমি।

এ উপজেলার আরেক কৃষক তাজমহল বলেন,চারা থেকে শুরু করে ডিজেল ও সারের কোনো সংকট নেই, এবারে তীব্র কুয়াশা না থাকায় চারা ভালোভাবেই গজিয়েছে। ফলে চারার সংকট নেই। এতে করে অনেক কৃষক নিজে চারা ব্যবহার করে বিক্রি করতে পারছেন।

কালাই উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অরুণ চন্দ্র রায় জানান, বোরো ধান চাষে সুষমের মাত্রায় সার দেওয়ার জন্য এবং সঙ্গে সঙ্গে লাইন, লগো এবং পাশিং করার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১২হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে বোরো চাষে বেশি হওয়ার সম্ভবনা। এবার উপজেলায় প্রণোদনা হিসেবে কৃষকদের মাঝে ১ হাজার তিনশত হাইব্রিট জাতের ২ কেজি করে ধানের বীজ দেওয়া দিয়েছেন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *