ঐতিহ্যবাহী সরকারি আজিজুল হক কলেজের ৮৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

বগুড়া অফিস:

বগুড়ার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি আজিজুল হক কলেজের আজ (৯ জুলাই) ৮৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। উত্তরবঙ্গের এ প্রতিষ্ঠানটি  ১৯৩৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। সারাদেশে শিক্ষার গুণগত মান বিকাশে অবদান রাখছে এই কলেজ। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের ৬৮৫টি কলেজের তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশের সেরা কলেজগুলোর তালিকায় বার বার স্থান দখল করে আসছে এই প্রতিষ্ঠানটি।  প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান আয়তন ৬৩ একর। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন বাংলায় প্রথম সম্মান কোর্স চালু করেছিল বগুড়ার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি।

অবিভক্ত বাংলার বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব স্যার মুহাম্মদ আজিজুল হকের নামে এ প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করা হয়। তখন তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন।

১৯৩৮ সালের ৪ এপ্রিল বগুড়ায় একটি কলেজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে খাঁন বাহাদুর মোহাম্মদ আলীকে সভাপতি এবং মৌলভী আব্দুস সাত্তারকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি কমিটি গঠিত হয়। এই কলেজটি ১৯৩৯ সালের ৯ জুলাই প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব স্যার আজিজুল হক যার নামে কলেজটির নামকরণ করা তিনি সে সময় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এর উপাচার্য থাকাকালে সরকারি স্কুলে শিক্ষার মাধ্যম ইংরেজি থেকে বাংলায় চালু, প্রাথমিক শিক্ষা পরিকল্পনাকে অ্যাক্টে পরিণত, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ প্রতিষ্ঠা (১৯৪০), শিক্ষা সপ্তাহ পালন কর্মসূচি প্রবর্তন, বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার মহাজনী বিল ও প্রজাস্বত্ব আইন উপস্থাপন করেন।

কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন ড. এম.এম. মুখার্জি (আগস্ট ১৯৩৯- সেপ্টেম্বর ১৯৩৯) এবং প্রথম উপাধ্যক্ষ ছিলেন শ্রী এস.পি সেন। কলেজের যাত্রা শুরুর প্রায় দুই বছর পর্যন্ত কলেজের ক্লাস অস্থায়ীভাবে সুবিল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে (বর্তমান) নেয়া হয়। পরবর্তীতে এটি ফুলবাড়ি বটতলাতে স্থানান্তরিত করা হয়। ১৯৬৮ সালের ১৫ এপ্রিল কলেজটি সরকারিকরণ করা হয়।

এ প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ ছিলেন প্রখ্যাত ভাষাবিজ্ঞানী ও সাহিত্যিক ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ এবং সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলী। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধে এ কলেজের বেশ কয়েকজন ছাত্র শহীদ হন। কলেজের শিক্ষকদের মধ্যে ছিলেন সাহিত্যিক শাহেদ আলী ও কবি আতাউর রহমান। শিক্ষার্থীদের তালিকায় আছেন কণ্ঠশিল্পী শওকত হায়াত খান, কবি মহাদেব সাহা, ভাষাসৈনিক গাজীউল হক, বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক ড. আনোয়ার হোসেন, জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ড. এনামুল হক, শিক্ষক মমতাজুর রহমান তরফদার প্রমুখ।

বর্তমানে কলেজেটিতে ২৩টি বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্সের পাশাপাশি বিএসসি, বিএ, বিএসএস ও বিকম কোর্স চালু আছে।সরকারি আজিজুল হক কলেজে প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন। শিক্ষার মান ধরে রাখায় প্রতিষ্ঠানটি উত্তরবঙ্গের অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *